অর্থনীতি বিষয়ে পড়ছেন মিতু (২০)। তিনি টিউশনি করে মাকে সহায়তা করছেন সংসারের খরচ জোগাতে। মিতু গান গাইতে ও ছবি আঁকতে পছন্দ করেন। পাশাপাশি কম্পিউটার ব্যবহারের দক্ষতাও আছে তাঁর। তবে এত সব অর্জন মিতুর জন্য মোটেই সহজ ছিল না। তাঁকে এত দূর পৌঁছে দিয়েছে তাঁর হাল না ছাড়ার মানসিকতা।
শৈশবেই নানা অন্যায় ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে মিতুকে। তাঁর বাবা তাঁকে ও তাঁর মাকে ঘর থেকে বের করে দেন। কিছুদিনের জন্য তাঁদের আশ্রয় জোটে নানাবাড়িতে।
নিরুপায় মিতু ভাবতে পারছিলেন না, তাঁদের কপালে কী ঘটবে! তবে সৌভাগ্যবশত মিতু ও তাঁর বোনের দায়িত্ব নেয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশের হ্যাপি হোম। প্রতিষ্ঠানটি ‘হ্যাপি হোম’ প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত মেয়েশিশুদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাদান, জীবনমুখী দক্ষতার উন্নয়ন, সৃজনশীল বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। সব মিলিয়ে ‘আপন ঘর’ বলতে আমরা যা বুঝি, হ্যাপি হোম তেমনই একটি ভালোবাসার নিরাপদ জায়গা পথশিশুদের জন্য।
অতীতের সেই অবহেলা ও অনিশ্চয়তার দিনগুলোতে মিতুর পাশে ছিল হ্যাপি হোম। তাই এখন জীবনের নতুন পথচলায় মিতু হ্যাপি হোমে তাঁর স্মৃতিমাখা শৈশবের দিনগুলো অনুপ্রেরণা হিসেবেই দেখেন।
পরিবারের সঙ্গে যত্নে ও নিরাপদে শৈশবে বেড়ে ওঠার কথা থাকলেও পথশিশুদের বড় হতে হয় কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে। মেয়ে পথশিশুদের পরিস্থিতি আরও নাজুক। আর তাই মেয়েশিশুদের মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে একশনএইড বাংলাদেশের হ্যাপি হোম প্রকল্প।
মেয়েশিশুদের সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যেই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আর শিশুদের জীবন রাঙিয়ে দিতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এশিয়ান পেইন্টসকে ধন্যবাদফারাহ্ কবির, কান্ট্রি ডিরেক্টর, একশনএইড বাংলাদেশ
অভিনব ভাবনা ও ভোক্তাকেন্দ্রিক কোম্পানি এশিয়ান পেইন্টস হ্যাপি হোমের মেয়েদের জীবন আরও বর্ণিল করতে একটি বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি হ্যাপি হোমের দেয়ালে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় পেইন্টিং উপহার দিতে উদ্যোগী হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এশিয়ান পেইন্টসের একটি বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত হ্যাপি হোমের মেয়েদের কাছে তাদের ভালো লাগা ও ভাবনার কথা জানতে চায়। মেয়েরা তাদের দেয়ালের রং কীভাবে দেখতে চায়, সেই পছন্দ ও অনুভূতির কথা জানায় বিশেষজ্ঞ দলটিকে।
এশিয়ান পেইন্টস যত্ন ও ভালোবাসায় তাদের সেইফ ইজি পেইন্টিং সার্ভিসের মাধ্যমে হ্যাপি হোমের মেয়েদের দেয়াল রাঙিয়ে দিয়েছে। দেয়াল রঙিন করার জন্য তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন অপশন দেওয়ার পাশাপাশি অভিজ্ঞতা ও যত্নের মাধ্যমে সেইফ ইজিপেইন্টিং সার্ভিস কাজটি সম্পন্ন করে। এশিয়ান পেইন্টসের অভিজ্ঞ দলের সার্বিক সহযোগিতায় একেবারে নির্বিঘ্নে দেয়াল রাঙানোর কাজটি শেষ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে হ্যাপি হোমের মেয়েদের কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি।
সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে শিশুদের ঘরের সাজসজ্জা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হ্যাপি হোমের রঙিন দেয়াল শিশুদের কল্পনাশক্তির বিকাশে সহায়ক হবে। তারা আরও আত্মবিশ্বাস ও তৃপ্তি নিয়ে প্রতিদিনের কাজগুলো করতে পারবে এবং আনন্দময় সময় কাটাবে।
হ্যাপি হোমের রঙিন দেয়াল শিশুদের কল্পনাশক্তির বিকাশে সহায়ক হবে। তারা আরও আত্মবিশ্বাস ও তৃপ্তি নিয়ে প্রতিদিনের কাজগুলো করতে পারবে এবং আনন্দময় সময় কাটাবে
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘পথশিশুদের মধ্যে মেয়েশিশুরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এবং অসহায়। এই বিষয়ের বিবেচনা থেকেই আমরা হ্যাপি হোম প্রকল্প শুরু করি। মেয়েশিশুদের সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যেই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আর শিশুদের জীবন রাঙিয়ে দিতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এশিয়ান পেইন্টসকে ধন্যবাদ।’
রমজান মাসজুড়ে ও পবিত্র ঈদুল ফিতর পর্যন্ত ক্রেতাদের কেনা এশিয়ান পেইন্টস আল্টিমা ও রয়্যাল লাক্সারি ইমালশন রেঞ্জের রঙের প্রতি লিটারের মূল্য থেকে এক টাকা পৌঁছে যাবে হ্যাপি হোমের মেয়েশিশুদের জন্য। একটি ঘর রাঙাতে কেনা রঙের অর্থ ব্যবহার হবে অন্যজনের জীবন রাঙাতে, যার হয়তো কোনো ঘরই নেই।
সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ কোম্পানি হিসেবে এশিয়ান পেইন্টস সব সময় সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের কথা ভাবে। হ্যাপি হোমের মেয়েশিশুদের জন্য তাদের কক্ষগুলো রঙিন করতে পেরে আমরা আনন্দিতনাজমুল হুদা, প্রধান (মার্কেটিং অ্যান্ড নিউ ক্যাটাগরিজ), এশিয়ান পেইন্টস
এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান (মার্কেটিং অ্যান্ড নিউ ক্যাটাগরিজ) নাজমুল হুদা বলেন, ‘সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ কোম্পানি হিসেবে এশিয়ান পেইন্টস সব সময় সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের কথা ভাবে। হ্যাপি হোমের মেয়েশিশুদের জন্য তাদের কক্ষগুলো রঙিন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আশা করি এই উদ্যোগ তাদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’ বিজ্ঞপ্তি।