ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩–এর খসড়া জনসমক্ষে প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদিত হয়েছে, এমন তথ্য গত ২৮ মার্চ গণমাধ্যমকে জানানো হয়। তা সত্ত্বেও খসড়াটি উন্মুক্ত না করার কারণে আইনের খসড়ায় ব্যাংক খাতের আলোচিত চ্যালেঞ্জগুলো থেকে উত্তরণে কার্যকর উপায়সহ সার্বিকভাবে জনগণের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রায় এক মাস আগে আইনটির খসড়া মন্ত্রিসভা কমিটিতে যখন অনুমোদিত হয়, তখন আমাদের প্রত্যাশা ছিল, বর্তমান সরকারেরই অনুসৃত চর্চা অনুযায়ী খসড়াটি সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত ও পরামর্শের জন্য প্রকাশিত হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত খসড়াটি জনসমক্ষে উন্মুক্ত করা হয়নি।’
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) সফররত প্রতিনিধিরা খসড়াটি দেখতে চেয়েছেন। তখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গোপনীয়তা সুরক্ষার যুক্তিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে, যা আমাদের হতবাক করেছে। প্রত্যক্ষভাবে জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট এই আইনকে কোন যুক্তিতে গোপনীয় শ্রেণিভুক্ত করা সম্ভব, তা যেমন বোধগম্য নয়, তেমনি এই সংশোধনীর মাধ্যমে জনস্বার্থের তুলনায় কোনো বিশেষ মহলের দুরভিসন্ধির সুরক্ষাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে কি না, এ প্রশ্ন তোলার অবকাশ সৃষ্টি হয়েছে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘গোপনীয় নয়, এমন একটি আইনের খসড়া প্রকাশে অনীহা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে এ কারণে যে ব্যাংক খাতের নীতিকাঠামো ইতিমধ্যে ঋণখেলাপি, বিভিন্ন প্রকার জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী মহলের করায়ত্ত হয়েছে বলে জনমনে উদ্বেগ আছে। তাই সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, খসড়াটি অনতিবিলম্বে জনস্বার্থে প্রকাশ করুন। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত গ্রহণ করার পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করুন।’
টিআইবি আশা প্রকাশ করেছে, সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট খাতের অংশীজন, বিশেষ করে এ খাতের বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হবে। তা না হলে ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে।