চলতি মার্চ মাসের প্রথম ২২ দিনে ব্যাংক মাধ্যমে ১৪১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। গত মাসে ২১৭ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। যা গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ বেশি।
সাধারণত দুই ঈদের আগে প্রবাসী আয় অন্য মাসের তুলনায় বেশি আসে। পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ ও আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রবাসী আয় আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান ব্যাংক কর্মকর্তারা।
গত বছর ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়েছিল এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে। ওই মাসে প্রবাসী ১৬৮ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। তার আগের মাসে (মার্চ, ২০২৩ সাল) দেশে প্রবাসী আয় আসে ২০২ কোটি ডলারের। অবশ্য চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মার্চ মাসের ১-৮ মার্চ ৫১ কোটি, ৯-১৫ মার্চ ৫১ কোটি এবং ১৬-২২ মার্চ ৪০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। ২২ মার্চ পর্যন্ত দেশে আসা ১৪১ কোটি ডলারের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্য ব্যাংকের মাধ্যমে ১৮ কোটি ডলার এসেছে। বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১২০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। আর বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ৪০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে।
ডলার-সংকটের কারণে গত বছর ডলারের দাম নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেশি দামে প্রবাসী আয় কেনা, প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়াতে অতিরিক্ত প্রণোদনা দেওয়াসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে এরপরও গত বছরের বেশির ভাগ সময় বৈধ পথে প্রবাসী আয় কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়েনি। ব্যাংকগুলো অবশ্য এখন সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি নিজেরাই সমপরিমাণ প্রণোদনা দিচ্ছে।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি) ১ হাজার ৫০৮ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে। প্রবাসী আয়ে ইউএইর পরে রয়েছে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালির অবস্থান।
গত দুই অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে ইউএই তৃতীয় ও যুক্তরাজ্য চতুর্থ অবস্থানে ছিল। আর প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল যথাক্রমে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে ইউএই ও যুক্তরাজ্য। তালিকায় ওপরের দিকে উঠেছে।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় আসা কমেছে। এর বিপরীতে ইউএই ও যুক্তরাজ্য থেকে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে। এ কারণে দেশভিত্তিক প্রবাসী আয়ে এমন পরিবর্তন দেখা গেছে।