ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী নিরুদ্দেশ হওয়ায় ব্যাংকটির শীর্ষ এ পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) শফিউদ্দিন আহমেদকে। পাশাপাশি এমডি ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ঘটনায় ব্যাংক সাধারণ ডায়েরি করতে চাইলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি, বরং পরিবারকে তা করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ছুটি না নিয়ে ও ব্যাংককে অবহিত না করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ব্যাংকটি।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. ফরিদউদ্দীন আহমদ এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, গত বুধবার ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জরুরি সভা ডেকে ডিএমডি শফিউদ্দিন আহমেদকে এমডি পদের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমডি পদ শূন্য থাকার বিধান নাই, এ জন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এমডি নিখোঁজ হওয়ায় আমরা সাধারণ ডায়েরি করতে চেয়েছিলাম। তবে থানা থেকে বলা হয়েছে, এটা পরিবারকে করতে হবে। আমরা এখন প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছি।’
ইউনিয়ন ব্যাংক ছিল আওয়ামী লীগ সরকার ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। ব্যাংকটির প্রায় ৬৫ শতাংশ ঋণ একাই নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক গত আগস্টে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়। তবে নতুন পর্ষদের সদস্যদের অভিযোগ, ব্যাংকটিতে এরপরও এস আলম গ্রুপের প্রভাব কমেনি। এমডি মোকাম্মেল হকের অসহযোগিতার কারণে তাঁরা ব্যাংকটির পরিস্থিতির বিষয়ে সঠিক তথ্যও পাননি।
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন মোকাম্মেল হক চৌধুরী। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইউনিয়ন ব্যাংকের একটি রহস্যময় হিসাব থেকে নগদ টাকা উত্তোলন ও মোকাম্মেল হকের নিজের হিসাব থেকে তাঁর গচ্ছিত পুরো অর্থ তুলে নেওয়ার বিষয়ে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এরপর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাসা থেকে বেরিয়ে চলে যান মোকাম্মেল হক চৌধুরী। এর আগে সোমবার দুপুরে তাঁর স্ত্রী নাজনীন আকতার দুই ছেলেমেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশে বাসা ছাড়েন। ব্যাংকের পরিচালকদের চোখে তিনি এখন নিখোঁজ।