দেশের চলমান ডলার–সংকটের মধ্যে বড় ধরনের দুঃসংবাদ নিয়ে এল প্রবাসী আয়ের তথ্য। ডলার–সংকট কাটাতে অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যখন প্রবাসী ও রপ্তানি আয় বাড়িয়ে ডলার–সংকট মোকাবিলার কথা বলছেন, তখনই প্রবাসী আয়ে এ দুঃসংবাদ মিলল। গত ৪১ মাসে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় দেশে এসেছে সেপ্টেম্বর মাসে। প্রবাসী আয়সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের শেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাসে দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় এসেছে ১৩৪ দশমিক ৩৬ কোটি মার্কিন ডলার। এর আগে শেষবার এর চেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছিল ২০২০ সালের এপ্রিলে। ওই মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ১০৯ কোটি মার্কিন ডলার।
২০২০ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০২০ সালের এপ্রিলজুড়ে দেশে করোনার কারণে নানা ধরনের বিধিনিষেধ ছিল। তাতে ওই মাসে প্রবাসী আয়ে কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এরপর অবশ্য করোনার মধ্যেও প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু এখন এসে সবকিছু স্বাভাবিক থাকার পরও প্রবাসী আয়ে বড় ধরনের ধস নেমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আজ রোববার প্রবাসী আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে গত ৫১ মাসের প্রবাসী আয়ের হিসাব রয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের তুলনায় কম প্রবাসী আয় এসেছিল মাত্র দুই মাসে, তা ২০২০ সালের মার্চ ও এপ্রিলে। করোনার তাৎক্ষণিক প্রভাবে ওই দুই মাসে প্রবাসী আয় কমে গিয়েছিল। ২০১৯–২০ অর্থবছর থেকে চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এক মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল ২০২০ সালের জুলাইয়ে। ওই মাসে প্রায় ২৬০ কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মাসে দেশে যে প্রবাসী আয় এসেছে, তা গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ কম এবং গত আগস্টের তুলনায় এ আয় প্রায় ১৬ শতাংশ কম। আর ২০২০ সালের জুলাইয়ে আসা সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয়ের হিসাব বিবেচনায় নিলে গত মাসে প্রবাসী আয় কমেছে ৪৮ শতাংশের বেশি। ডলার–সংকটের এই সময়ে প্রবাসী আয়ের এ পতনকে চলমান সংকটে বড় ধরনের দুঃসংবাদ বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।