খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, মানুষের আর্থিক লেনদেন ছিল কঠিন কাজ। সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয়ের কথা মাথায় আসত প্রথমেই। সময়টা বদলে গেছে, এখন মুহূর্তেই লেনদেন হচ্ছে দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। মানুষ এখন ডিজিটাল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। লেনদেনের ডিজিটালাইজেশনও হয়েছে সেই সূত্র মেনে। অন্যদিকে আবার টাকা লেনদেনের গতির সঙ্গে সমানুপাতিক হারে অর্থনীতির চাকাও ঘুরছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশে এখন ২৫ শতাংশ মানুষের ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে সব ধরন মিলিয়ে কার্ডের সংখ্যা তিন কোটির মতো। ইন্টারনেট ব্যাংকিংও গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়েছে। এরপরেও দেখা যাচ্ছে অ্যাপের চাহিদাই বেশি। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে অনেককেই নড়েচড়ে বসতে হচ্ছে এবং সময়ের চাহিদা অনুসারে সব ঢেলে সাজাতে হচ্ছে। তাতে প্রতিযোগিতা বাড়ছে।
ঠিক এই জায়গাতেই আমরা আছি সুবিধাজনক অবস্থায়। সময়টা এখন এমন যে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে এক কোটি গ্রাহক থাকে, তাহলে ওই এক কোটির প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন পছন্দ আর চাহিদা থাকতে পারে। প্রচলিত ব্যাংকিং পদ্ধতিতে সেটি পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। এখানেই আমাদের মতো প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুযোগ বেশি। নগদের ৯ কোটির বেশি নিবন্ধিত গ্রাহক আছে। আর তারা ইতিমধ্যে ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ত। এমনই একটা সময়ে দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক নিয়ে আসছি আমরা। সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাইয়ের শুরুতেই ডিজিটাল ব্যাংক উদ্বোধন হবে। তখন গ্রাহক চাহিদা পূরণে নিশ্চয়ই এমন কিছু সবাই দেখবে, যা আগে ভাবেনি কেউ।
আমার বিশ্বাস, ডিজিটাল ব্যাংক চালু হলে বিস্তৃত কলেবরের সেবা দেওয়া যাবে। তাতে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি হবে এবং সাধারণ মানুষের জীবনমানেরও উন্নতি হবে। গ্রাহককে ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহিত করতে নানান ধরনের অফারও আমরা দিই।
দেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্টের পথে এগোচ্ছে, অর্থনীতির আকারও বড় হচ্ছে। এখন শুধু নগদে দিনে গড়ে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। ডিজিটাল ব্যাংক চালু হলে এই অঙ্ক বাড়বে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে, বাড়ছে লেনদেন। পরিকল্পনায় এ বিষয়গুলোও সমন্বয় করা হচ্ছে। চাইলেই গ্রাহক যেন ৫ টাকা দিয়ে পণ্য কিনে নগদের অ্যাপে মূল্য পরিশোধ করতে পারে, সেভাবেই আমরা কাজ করছি।