বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযোগ, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন মাসুদ বিশ্বাস। দুদকের কাছে তাঁর বিষয়ে যেসব অভিযোগ জমা হয়েছে, সেগুলো হলো স্কাই ক্যাপিটাল এয়ারলাইনস লিমিটেডের বিমান ক্রয়ে সন্দেহজনক অনিয়মের অভিযোগ ঘুষের বিনিময়ে চেপে যাওয়া; এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল পারভেজ ব্যাংক থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা লুটপাটসহ আর্থিক অনিয়মের রিপোর্টকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯–এর আওতায় গোয়েন্দা প্রতিবেদন হিসেবে প্রেরণ না করে সাধারণ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন হিসেবে প্রেরণের অনুমতি দেওয়া।
মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, অনিয়ম ও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিমিদ্রী লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিতের আদেশ আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া; তানাকা গ্রুপ, এস এ গ্রুপ ও আনোয়ার গ্রুপের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, অর্থ পাচারসংক্রান্ত সুনিশ্চিত তথ্য থাকা সত্ত্বেও এসব মামলা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে প্রেরণ না করে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে নথিভুক্ত করা।
সরাসরি অর্থ পাচারের অভিযোগও আছে মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। দুদক জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের সঙ্গে যোগসাজশে ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন করে বিদেশে পাচার করেছেন মাসুদ বিশ্বাস। সেই সঙ্গে আবদুল কাদির মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিদেশে অর্থ পাচারসহ ঘুষের বিনিময়ে জিনাত এন্টারপ্রাইজের বিদেশে অর্থ পাচারের মামলা ধামাচাপা দিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি।
দুদক বলেছে, গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে মাসুদ বিশ্বাসের অবৈধভাবে অর্জিত বা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ আছে—প্রাথমিকভাবে বিষয়টি সঠিক মনে হওয়ায় কমিশন তা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর মাসুদ বিশ্বাস পদত্যাগ করেন।