গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ। আজ বাংলাদেশ ব্যাংকে
গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ। আজ বাংলাদেশ ব্যাংকে

ব্যবসার নামে ব্যাংক লুটপাটকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি করলেন ব্যবসায়ীরা

ব্যবসার নামে ব্যাংক থেকে অর্থ লুটপাটকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, ব্যবসার নাম করে যাঁরা লুটপাটে জড়িয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে ব্যবসায়ী সমাজ সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এমন মনোভাবের কথা জানায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সোয়া একটা পর্যন্ত প্রতিনিধিদলটি গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে।

ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদলে ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল প্রমুখ।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ। আজ বাংলাদেশ ব্যাংকে

গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আবদুল আউয়াল মিন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা অন্যায়ভাবে সম্পদ লুট করেছে, অন্যায়ভাবে সম্পদ অর্জন করেছে এবং ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দেয়নি, তাদের বিরুদ্ধ কঠোর ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে অনুরোধ করেছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ভালো ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারবে না।’

গভর্নরের কাছে ব্যাংকঋণের কিস্তি ৩ থেকে ৬ মাস বাড়ানোর দাবি করেছেন বলে জানান এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা ঋণের কিস্তির সময়সীমা ৩ থেকে ৬ মাস বাড়ানোর কথা বলেছি। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপরও সময় না বাড়লে অনেক ব্যবসায়ী ঋণখেলাপি হয়ে যাবে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, ‘জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি। এ বিষয়ে গভর্নর সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন।’ এ ছাড়া গত ১ থেকে ২ মাসে শিল্পকারখানার ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যবসায়ীদের নমনীয় সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ডলারের বিনিময় হারের কারণে লোকসানে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা গভর্নরকে বলেছি।’ তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ী সমাজ অর্থনীতির পক্ষে। সরকারের যেকোনো ভালো পদক্ষেপে তাঁরা সহায়তা করবেন।

বিগত সরকারের সময়ে ভুল তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে যেসব নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল, সেগুলো পুনর্বিবেচনার কথা বলেছেন ব্যবসায়ীরা। এই বিষয়টি জানিয়ে মোহাম্মদ হাতেম সাংবাদিকদের বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আমদানি-রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া ভুল তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে রপ্তানি প্রণোদনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় পুনর্বিবেচনা করা দরকার।

মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, ‘গভর্নরের সঙ্গে সভায় আমরা ব্যাংকিং খাতের সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। সংস্কার খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সুদহার কমানোর বিষয়ে কথা হয়েছে। সে জন্য গভর্নর ৬ থেকে ৭ মাস সময় চেয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমলে তিনি সুদহার কমানোর বিষয়ে কাজ করবেন।’