বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ২৫ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চায় বাংলাদেশ। এ নিয়ে গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু হয়েছে। এতে বিশ্বব্যাংকের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা এনা লুইজা গোমেজ। প্রথম দিন অংশ নেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা। এবারের মিশনের সব আলোচনা তথা দর-কষাকষি প্রথমবারের মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে হচ্ছে।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এখন আর আগের মতো বাজেট সহায়তার অর্থ খাতনির্বিশেষে খরচ করা যায় না। সে জন্য অর্থ কীভাবে খরচ করতে হবে, তা নিয়েই মূলত গতকাল আলোচনা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ সামাজিক নিরাপত্তা, দারিদ্র্য বিমোচন প্রভৃতি খাতে এই অর্থ খরচ করতে হবে।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক মিশনের প্রধান এনা লুইজা গোমেজ ব্রাজিল থেকে আলোচনায় যুক্ত হচ্ছেন। বাকি সদস্যরা নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে আলোচনায় যোগ দেন। ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়; সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি); বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি); পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট ১২টি দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আগামী মার্চ মাস নাগাদ বাজেট সহায়তা বিশ্বব্যাংক বোর্ডের অনুমোদন পেতে পারে। চলতি অর্থবছরেই সহায়তার অর্থ ছাড় হবে। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, দর-কষাকষি করে ২৫ কোটি ডলার বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে।
বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে চলতি অর্থবছরে ৫০ কোটি ডলারের বাজেটে সহায়তা পাওয়ার আশা করছে সরকার। এর মধ্যে ২৫ কোটি ডলার নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। কোভিড–১৯ শুরু হওয়ার পর এই পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ।
এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে আগামী ৩ বছরে আরও ৬১৫ কোটি ডলারের বেশি পাওয়া যেতে পারে।
দেশে গত কয়েক মাসে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) ধারাবাহিকভাবে কমেছে। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় ডলার বেশি চলে যাচ্ছে। রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়েও সংকট আছে।
এই সংকট মোকাবিলায় সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকসহ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপানের মতো বড় উন্নয়ন সহযোগীদের কাছেও বাজেট সহায়তার জন্য গেছে। এসব সংস্থা ও দেশ অবশ্য বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিচ্ছে না।