কেনাকাটার ক্ষেত্রে ডেবিট ও ক্রেডিট—উভয় ধরনের কার্ডের ব্যবহারই বর্তমানে বেড়েছে। শুধু দেশের ভেতরেই নয়, বিদেশে গিয়েও এসব কার্ডে বিদেশি মুদ্রায় লেনদেন করার সুযোগ রয়েছে। সে জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড এখন অনেকটাই প্রতিদিনের জীবনযাত্রার সঙ্গী হয়ে গেছে। ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ছাড়া নানা ধরনের কার্ডের প্রচলনে কমে গেছে নগদ টাকা ব্যবহারের মাত্রা।
বিশ্বজুড়ে আট ধরনের কার্ড প্রচলিত রয়েছে। সেগুলো হলো ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, প্রিপেইড কার্ড, ভার্চ্যুয়াল কার্ড, গিফট কার্ড, মাল্টি-ফাংশনাল কার্ড, মেটাল কার্ড ও উডেন কার্ড। এসব কার্ড সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
এ কার্ডের সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। এ কার্ড থেকে খরচ করা যাবে ততটুকুই, ঠিক যতটুকু অর্থ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে রয়েছে। মানে সঞ্চয়ের ওপর এর ব্যয় নির্ভর করে।
এ ধরনের কার্ডের জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী বেড়ে চলছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির সময় এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পেরেছেন অনেকেই। এ কার্ড থেকে খরচ করা টাকা ব্যাংক ঋণ হিসেবে গ্রাহককে দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময় পরে গ্রাহককে খরচকৃত টাকা পরিশোধ করতে হয়। তবে ‘বিপদের বন্ধু’ হিসেবে এ কার্ড অনেকেই সঙ্গে রাখেন। এ কার্ডের আরও ১২টির মতো ধরন রয়েছে।
এ ধরনের প্লাস্টিক কার্ড দিয়ে অনলাইনে বা পিওসি মেশিনে কেনাকাটা করা যায়। এ কার্ডে আগে থেকেই টাকা বা ডলার লোড করে রাখতে হবে। খরচ হয়ে গেলে আবার লোড করতে হবে। ডেবিট কার্ডের সঙ্গে এ কার্ডের পার্থক্য হচ্ছে, এ কার্ড পেতে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজন নেই।
বাস্তবে এ কার্ডের দৃশ্যমান কোনো অস্তিত্ব নেই, যা ডিজিটালভাবে মোবাইলে অ্যাপস বা ওয়ালেট আকারে থাকে। যা আপনি মোবাইল থেকেই পরিচালনা করতে পারবেন। বিভিন্ন ব্যাংক এ কার্ড সেবা ফ্রিতে দিয়ে থাকে, কিন্তু এর চার্জ ডেবিট কার্ডের মতোই দিতে হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কোর্স, বুটক্যাম্প কিংবা ডোমেইন কেনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমে এ কার্ডের প্রয়োজন হয়।
এ ধরনের কার্ড অনেকটা প্রিপেইড কার্ডের সংক্ষিপ্ত রূপ। প্রিপেইড কার্ডের অর্থ শেষ হয়ে গেলে আবার লোড নেওয়া যায়, কিন্তু গিফট কার্ড একবার ব্যবহারের জন্য। এটি আমেরিকান এক্সপ্রেস ও ভিসার মতো আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানও দিয়ে থাকে। উপহার হিসেবে এ কার্ডের প্রচলন রয়েছে।
এ কার্ডের মাধ্যমে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এক প্যাকেজে পাওয়া যায়। অতিরিক্ত কার্ড বহনের ঝামেলা থেকে নিশ্চিন্ত থাকতে অনেকেই এ কার্ড নিতে চান। তবে এ কার্ডের প্রচলন তেমন একটা দেখা যায় না। হাতে গোনা কয়েকটি দেশের কিছু ব্যাংকে এ ধরনের কার্ড সেবা দিয়ে থাকে। লেনদেনের আগে পছন্দ করে নেওয়ার সুযোগ থাকবে ক্রেডিট কার্ড থেকে পরিশোধ করবেন নাকি ডেবিট কার্ড থেকে। এ কার্ড ডুয়ো, স্মার্ট ইত্যাদি নামেও পরিচিত।
এই কার্ডের বিশেষত্ব হচ্ছে প্রচলিত প্লাস্টিকের কার্ডের পরিবর্তে এ কার্ডে মেটাল ব্যবহার করা হয়। সবার মধ্যে নিজের কার্ডটি আলাদা—এ ধরনের একটি অনুভূতি নিতেই শৌখিন গ্রাহকেরা এ কার্ডের ব্যবহার করে থাকেন।
উডেন মানে কাঠ। এ কার্ডটিতে মেটালের মতোই কাঠের ব্যবহার করা হয়। বিশ্বব্যাপী ক্ষতিকর প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে এ অভিনব কার্ডের প্রচলন শুরু হয়েছে। কয়েকটি ডিজিটাল ব্যাংক এ উদ্যোগটি নিয়েছে।
ভিন্নধর্মী একটি ক্রেডিট কার্ডের সন্ধান দিয়ে শেষ করা যাক। দুবাই শহর ভ্রমণে ধনীদের সেরা বন্ধু হচ্ছে ‘দুবাই ফার্স্ট রয়্যাল ক্রেডিট কার্ড’, যা দিয়ে প্রমোদতরিও কেনা যায়। এই কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা, ব্যয়ের কোনো সীমা না থাকা। কারা পায় রাজকীয় এ কার্ড? জানা যায়, এ কার্ডটি নিতে ব্যাংক হিসাবে অন্তত এক কোটি ডলার থাকতে হবে।
প্রশ্ন জাগতে পারে, এ কার্ডটি দেখতে কেমন? কার্ডটির দুই ধার খাঁটি সোনায় মোড়ানো, যার কেন্দ্রে আছে দশমিক ২৩৫ ক্যারেটের হীরা। কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে খোদাই করা থাকে কার্ডধারীর নাম। (সূত্র: লাক্সারিলঞ্চেস ডটকম)