তৃতীয়বারের মতো ‘বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেবে এইচএসবিসি

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মাহবুব উর রহমান, হোলসেল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান জেরার্ড হগি ও কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান তালুকদার নোমান আনোয়ার।
প্রথম আলো

দেশে তৃতীয়বারের মতো ‘বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেবে বহুজাতিক ব্যাংক দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি)। আজ রোববার সকালে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মাহবুব উর রহমান, হোলসেল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান জেরার্ড হগি ও কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান তালুকদার নোমান আনোয়ার।

২০১৯ সাল থেকে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে এইচএসবিসি বাংলাদেশ। এতে পৃষ্ঠপোষকতা করছে বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন। এ বছর পুরস্কারের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে এ রকম: বাংলাদেশ: প্রাউডলি রেজিলিয়েন্ট, গ্লোবালি এক্সিলেন্ট।

বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন খাতের দেশি বা বহুজাতিক সফল উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি জানাতে এ পুরস্কার দিচ্ছে এইচএসবিসি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মোট আটটি শ্রেণিতে ‘বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হবে। এর মধ্যে রপ্তানি খাতের জন্য থাকছে তিনটি শ্রেণি। প্রথমত, রপ্তানিতে উৎকর্ষ (তৈরি পোশাকশিল্প)। যাঁদের বার্ষিক আয় ৫ কোটি (৫০ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার ও তার বেশি, তাঁদের মধ্য থেকে এই পুরস্কারের জন্য বাছাই করা হবে। দ্বিতীয়ত, রপ্তানিতে উৎকর্ষ (সাপ্লাই চেইন ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ); যাঁদের বার্ষিক আয় ১ কোটি (১০ মিলিয়ন) ডলার বা তার বেশি, তাঁদের জন্য এই পুরস্কার।

তৃতীয়ত, রপ্তানিতে উৎকর্ষ (অসনাতন ও উদীয়মান ক্ষেত্র); যাঁদের বার্ষিক আয় ৩০ লাখ (৩ মিলিয়ন) ডলার বা তার বেশি, তাঁদের মধ্য থেকে এই পুরস্কারের জন্য বাছাই করা হবে।

অন্য শ্রেণিগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আমদানি বিকল্প শিল্পে অসামান্য অবদান। যাঁদের বার্ষিক উৎপাদিত পণ্যের মূল্যমান ১ কোটি (১০ মিলিয়ন) ডলার বা তার বেশি, তাঁরা এই শ্রেণিতে পুরস্কারের যোগ্য হবেন।

অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য আরেকটি শ্রেণি রয়েছে। বৈদেশিক বা দেশি বিনিয়োগ যা অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগে সহায়ক এবং নির্দিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কার্যকর অবদান রেখেছে, এমন প্রতিষ্ঠানকে এই শ্রেণিতে পুরস্কারের জন্য বাছাই করা হবে।

বাকি তিনটি শ্রেণি হচ্ছে সাসটেইনেবিলিটি এক্সিলেন্স, নতুন প্রযুক্তি প্রণয়নে শ্রেষ্ঠ, স্পেশাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড (ব্যক্তি, ব্যক্তিবর্গ অথবা প্রতিষ্ঠান)।

যারা টেকসই উদ্যোগ বা প্রকল্পের মাধ্যমে সমাজে কার্যকর ও যুগান্তকারী অবদান রেখেছে, এমন প্রতিষ্ঠান পাবে সাসটেইনেবিলিটি এক্সিলেন্স পুরস্কার। উদ্ভাবনী প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে জনজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে, এমন স্টার্টআপ বা অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠান নতুন প্রযুক্তি প্রণয়নে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পাবে। এ ছাড়া যেসব ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা কিংবা প্রতিষ্ঠান দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, উদ্ভাবনে উৎকর্ষ এনেছে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক অবদান রেখেছে, তাদের দেওয়া হবে বিশেষ অর্জন পুরস্কার।

প্রতিটি শ্রেণি থেকে একটি করে পুরস্কার দেওয়া হবে। তবে জুরিবোর্ড চাইলে কোনো শ্রেণিতে একাধিক পুরস্কারও দিতে পারে। যাঁরা এর আগে এই পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁরাও নতুন করে আবেদন করতে পারবেন।

এইচএসবিসি জানিয়েছে, এ পুরস্কারের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে মাশুল প্রয়োজন নেই, আবার তাঁদের এইচএসবিসির গ্রাহকও হতে হবে না। মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ১ অক্টোবর। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে এইচএসবিসির ওয়েবসাইটে।

সংবাদ সম্মেলনে এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মাহবুব উর রহমান বলেন, ‘রপ্তানি ছাড়াও দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙা হচ্ছে। সে জন্য আমরা শুরুতে রপ্তানি খাতে পুরস্কার দেওয়া শুরু করলেও পরে সার্বিক অর্থনীতিতে অবদানের জন্যও পুরস্কার দেওয়া শুরু করি।’

এইচএসবিসির হোলসেল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান জেরার্ড হগি বলেন, ‘অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সামনে আরও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে আমরা শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্জন তুলে ধরতে চাই, যাঁদের কৃতিত্বেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে আলোকিত হচ্ছে।