এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল ও ব্যাংকের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) জাফর ইকবাল হাওলাদার এবং সাবেক পরিচালক আদনান ইমামের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। আদনান ইমাম বর্তমানে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যান। তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আজ বৃহস্পতিবার এ নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছে।
এস এম পারভেজ তমাল হলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ রাশিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক। ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর এনআরবিসি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হলে ফরাছত আলীকে সরিয়ে চেয়ারম্যান হন এস এম পারভেজ তমাল। এরপর ব্যাংকটিতে পূর্ণকালীন অফিস করে তিনি এটাকে নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের পর ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা নেই এমন ব্যক্তিদের ব্যাংকটির শীর্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিতে খোলা হয় আলাদা কোম্পানি। গড়ে তোলা হয় বিশেষ গ্রুপ, যারা ব্যাংকের সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিত। আবার ঋণ দেওয়া হয় পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে। এ ছাড়া বাজেয়াপ্ত শেয়ার ক্রয় ও ব্যাংকের উপশাখার সব ব্যবসা এনজিও এসকেএস ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পনির্ভর করে ফেলা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নিকটাত্মীয়কে নিয়োগ দেওয়া হয় শীর্ষ পদে। ফলে নানা অনিয়মের পরও ব্যাংকটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন ব্যাংকটির দিকে নজর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠনের পর পরিচালক হিসেবে যুক্ত হন জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যান আদনান ইমাম। সম্প্রতি তিনি ব্যাংকের পরিচালক পদ ছাড়েন। তাঁরা দুজনে মিলে নানা ব্যবসায়ে যুক্ত হন। ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে অর্থ বের করার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
এদিকে ব্যাংকটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) জাফর ইকবাল হাওলাদার হলেন তাঁদের দুজনের ঘনিষ্ঠ। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাফর ইকবাল ব্যাংক থেকে নানা সুবিধা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এর পর থেকে দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দ বা স্থগিত করা হচ্ছে। সেই প্রক্রিয়ায় এবার এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, সাবেক পরিচালক ও কর্মরত এক কর্মকর্তার হিসাব জব্দ করা হয়েছে।