পবিত্র রমজান মাসে চাহিদা বাড়ে এমন ১১ ধরনের খাদ্যপণ্য আমদানিতে বিলম্বে বিল পরিশোধের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আসছে রমজানকে সামনে রেখে এসব খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানি করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলার সময় আমদানিকারকদের কোনো অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকে জমা দিতে হবে না। এতে এসব খাদ্যপণ্য দ্রুত ও সহজে আমদানি করা যাবে।
যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে এ সুবিধা পাওয়া যাবে, সেগুলো হলো চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা ও খেজুর। এসব পণ্য বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য জাহাজে ওঠানোর ৯০ দিন পর পর্যন্ত ব্যাংকের বিল পরিশোধ করা যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত কাঁচামাল আমদানিতে বিলম্বে বিল পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা ও সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে আমদানির ক্ষেত্রে লেনদেন সহজ করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এ সুবিধা বহাল থাকবে। আমদানিকারকদের এসব পণ্য আমদানিতে এ সিদ্ধান্ত সহায়তা করবে।
এর আগে নিত্যপণ্য আমদানিতে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে মার্জিন বা নগদ জমার হার নির্ধারণের নির্দেশনা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকাররা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া এ সুবিধার ফলে খাদ্যপণ্যের আমদানি বাড়বে। সরবরাহ বাড়ার ফলে বাজারে পণ্যগুলোর দামও কমে আসতে পারে। কারণ, ঋণ করে পণ্য আমদানি করতে হবে না। পণ্য বিক্রির পরই অনেক ব্যবসায়ী আমদানি দায় শোধ করার সুযোগ পাবেন।
গত সপ্তাহে ঢাকায় সচিবালয়ে সরকারের তিনজন উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ও গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ওই বৈঠকে যোগ দেন।
এতে সিদ্ধান্ত হয়, ঋণপত্র বা এলসি মার্জিন ছাড়াই নিত্যপণ্য আমদানি করা যাবে এবং যেসব প্রতিষ্ঠান খাদ্য, নিত্যপণ্য ও সার আমদানি করে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার কোনো সীমা থাকবে না।
ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় আজ নিত্যপণ্য আমদানিতে বিলম্বে বিল পরিশোধের সুবিধা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। শিগগিরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে বলে জানা গেছে।