গত ২০২১-২২ অর্থবছরে চা, দেশে তৈরি বাইসাইকেল ও এর যন্ত্রাংশ, দেশে তৈরি এমএস স্টিল পণ্য এবং দেশে উৎপাদিত সিমেন্ট শিট রপ্তানিও প্রণোদনা বা নগদ সহায়তার আওতাভুক্ত হয়। এবারও তা বহাল রাখা হয়েছে।
চলতি ২০২২–২৩ অর্থবছরেও ৪৩ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেবে সরকার। এসব পণ্য রপ্তানিতে ১ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৮ পণ্য রপ্তানিতে মিলবে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা।
এদিকে হালাল মাংসের পাশাপাশি এবার মাংসজাতীয় পণ্য রপ্তানিতেও নগদ সহায়তা যুক্ত করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জন্য নগদ সহায়তার তালিকা চূড়ান্ত করে গতকাল এক প্রজ্ঞাপনে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বছর যে ৮ খাতে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া হবে সেগুলো হলো শাকসবজি, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য খাত; অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) রপ্তানি, বৈচিত্র্যকৃত পাটপণ্য, শতভাগ হালাল মাংসে ও হালাল মাংসজাতীয় পণ্য, আলু, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড, শস্য ও শাকসবজির বীজ, আগর ও আতর পণ্য রপ্তানি খাত।
হালাল মাংসের পাশাপাশি এবার মাংসজাতীয় পণ্য রপ্তানিতেও নগদ সহায়তা যুক্ত করা হয়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে ৬ খাতের পণ্য রপ্তানিতে। এর মধ্যে রয়েছে হালকা প্রকৌশল পণ্য; চামড়াজাত দ্রব্য; আসবাবপত্র; অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি; সিনথেটিক ও ফেব্রিকসের মিশ্রণে তৈরি পাদুকা ও ব্যাগ এবং চাল রপ্তানি খাত। ১২ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে একটি খাতে। সেটি হলো পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্য রপ্তানি খাত তথা হেসিয়ান, স্যাকিং ও সিবিসি রপ্তানিতে।
এ ছাড়া ১০ শতাংশ প্রণোদনার মিলবে বেশ কয়েকটি খাতে। এর মধ্যে রয়েছে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বরফ আচ্ছাদিত হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি খাত; সাভারে চামড়াশিল্প নগরে অবস্থিত কারখানা ও সাভারের বাইরে অবস্থিত কারখানায় যেখানে নিজস্ব ইটিপি রয়েছে, এমন কারখানায় উৎপাদিত ক্রাস্ট ও ফিনিশড চামড়া, প্লাস্টিক দ্রব্য, কাগজ ও কাগজজাতীয় পণ্য, সফটওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার, জাহাজ রপ্তানি; ওষুধ পণ্য; হাতে তৈরি পণ্য (হোগলা, খড়, আখের/নারিকেলের ছোবড়া, গাছের পাতা/খোল, তৈরি পোশাকের ঝুট কাপড় থেকে); গরু ও মহিষের নাড়ি, ভুঁড়ি, শিং; পেট বোতল-ফ্লেক্স; পেট বোতল-ফ্লেক্স থেকে উৎপাদিত পলিইয়েস্টার স্টাপল, ফটোভোলাটিক মডিউল রপ্তানি, মোটরসাইকেল, কেমিক্যাল পণ্য, রেজার ও রেজার ব্লেডস, সিরামিক পণ্য, টুপি, কাঁকড়া ও কুঁচে, গ্যালভানাইজ শিট; ভোক্তা ব্যবহার্য ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক হোম ও কিচেন পণ্য রপ্তানি খাত।
এর বাইরে নতুন পণ্য বা নতুন বাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ হারে সহায়তা দেওয়া হবে। আগেও এ সহায়তা দেওয়া হতো। আগে আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে পণ্য পাঠালে নগদ সহায়তা দেওয়া হতো না। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যুক্তরাজ্যও। কারণ, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেছে।
নগদ সহায়তার হার কম হলেও রপ্তানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় রপ্তানি ভর্তুকি বেশি পাচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে চা, দেশে তৈরি বাইসাইকেল ও এর যন্ত্রাংশ, দেশে তৈরি এমএস স্টিল পণ্য এবং দেশে উৎপাদিত সিমেন্ট শিট রপ্তানিও প্রণোদনা বা নগদ সহায়তার আওতাভুক্ত হয়। এবারও তা বহাল রাখা হয়েছে।