বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, ‘রিজার্ভ নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে, তা অন্যায়। রিজার্ভ নিয়ে আমরা চিন্তিত, কিন্তু শঙ্কিত নই। তবে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের অর্থনীতি এখনো সবল আছে। অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে আমরা এখন ভারতের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছি।’
অর্থনৈতিক সুরক্ষায় অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির কৌশল নিয়ে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক গভর্নর এই মন্তব্য করেন। আজ রাজধানীর এফডিসিতে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় তেজগাঁও কলেজকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকেরা বিজয়ী হন।
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘ঋণখেলাপিরা একবার নয়, দুবার নয়, বারবার কেন পার পেয়ে যাবেন। কেন ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ করবেন না। এক হাজার টাকার কৃষিঋণ ফেরত দিতে না পারলে কেন কিষান-কিষানিদের জেলে যেতে হয়। অথচ ১০ হাজার, ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপিরা সব দলের সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানদের ডানে-বাঁয়ে বসে বিদেশ ভ্রমণ করেন। এটা আমার হিসাবে মেলে না। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থিতিশীলতা বজায় রেখে সমঝোতা করা উচিত। রাজনৈতিক বিরোধের মীমাংসা না করে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিলে আমাদের ভবিষ্যৎ খারাপ হবে।’
সাবেক এই গভর্নর আরও বলেন, ‘জাতীয় সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যই ব্যবসায়ী, যাঁরা নিজের স্বার্থে আইন প্রণয়ন করেন। তাই রাজনীতিবিদদের আরও শক্তিশালী করে দেশের স্বার্থে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। আইএমএফের ঋণ নিয়ে আমরা যদি আর্থিক খাতের সংস্কার করতে না পারি, তাহলে সে ঋণ নিয়ে লাভ কী? দেশের আড়াই কোটি লোকের মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ডলার। অথচ কর দিচ্ছেন মাত্র ২৮ লাখ মানুষ। বাকিদের করের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘গত ৫২ বছরে আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রসর অবিশ্বাস্য হলেও আমাদের অনেক সমস্যা আছে। কিছু চাটার দলও আছে। যে কারণে অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে।’