যুক্তরাষ্ট্রে সিলিকন ব্যাংকের পতন ও অর্থ খাতের শিক্ষা

  • ১৯৮৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সান্টা ক্লারা নগরীতে এসভি ব্যাংকের জন্ম।

  • মার্কিন মুলুকে প্রায় ৪ হাজার ৫০০ ব্যাংকের মধ্যে এসভি বেশ তাড়াতাড়ি ১৬তম স্থান দখল করে।

  • এসভি ব্যাংক ধসের পেছনে আসল কারণ একটিই। ঝুঁকি অনুধাবনের অক্ষমতা।

  • ইতিমধ্যে সরকারি নীতিনির্ধারকেরা আশ্বস্ত করেছেন যে আমেরিকার ব্যাংক ধসে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ নেই।

গত সপ্তাহে বন্ধ হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক

মার্চের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে টপাটপ দুটি মাঝারি মাপের আঞ্চলিক ব্যাংক ধসে পড়ল। প্রথমে ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বা এসভি ব্যাংক এবং তারপর নিউইয়র্কের সিগনেচার ব্যাংক। এ কয়েক দিনে মার্কিন শেয়ারবাজারে শুধু ব্যাংক খাত ১০০ বিলিয়ন ডলার বাজার মূলধন হারাল, ইউরোপ ৫০ বিলিয়ন, বিশ্ব প্রায় ৪০০ বিলিয়ন।

এটা হলো কীভাবে? বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের মতো এমন দেশে যেখানে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এত শাণিত, সজাগ ও জ্ঞাননির্ভর। দ্বিতীয় কথা, এ থেকে শিক্ষা নেওয়ার কী আছে? একি ২০০৮ সালের মতো আরেক বৈশ্বিক সংকটের উদ্বোধনী সংগীত? বাংলাদেশের মতো অর্থনীতির জন্য কোনো সতর্ক বার্তা আছে কি? নাকি বাংলাদেশ আর্থিক স্থিতিশীলতার মাপে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে দিয়েছে?

এই শেষ প্রশ্নটির উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ বানিয়ে দিতে পারি, তাহলে স্বদেশের কয়েকজন মন্ত্রী বা কর্তাব্যক্তির আগামী কয়েক দিনের ভাষণের ভালো খোরাক দিতে পারব বলে মনে হয়। তাঁদের কয়েকজন ইতিমধ্যে বাংলাদেশ যে বেশ কয়েকটি সূচকে আমেরিকা ও ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলে দিয়েছে—সে কথা ‘নির্বোধ’ আমজনতাকে বুঝিয়ে ফেলেছেন। এর সঙ্গে আরেকটি মাপকাঠি যুক্ত হলে বৃহস্পতি তুঙ্গে। তাই প্রথমে দেখা দরকার, এসভি ব্যাংক বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ কেন ডুবল।

যুক্তরাষ্ট্রে দুটি ব্যাংকে ধস নেমেছে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়েই ব্যাংক খাত নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। সবাই সতর্ক হয়ে গেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশের কী শিক্ষা নেওয়ার আছে, সেটিও এখন আলোচনার বিষয়।

এসভি ব্যাংকের উত্থান

১৯৮৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সান্টা ক্লারা নগরীতে এসভি ব্যাংকের জন্ম এবং ঠিক ৪০ বছর পর তার মৃত্যু। কিন্তু সেটির জীবন বর্ণাঢ্য। টেক স্টার্ট আপ বা প্রযুক্তির ছোটখাটো ব্যবসা যাঁরা শুরু করতে চান, তাঁদের প্রাণভোমরা এই ব্যাংক। কোনো দুই নম্বর কাজে জড়িত ছিল না।

বড় বড় টেক কোম্পানির তেলে মাথায় তেল দিত না; বরং প্রযুক্তি উদ্ভাবক ছোট উদ্যোক্তাকে দাঁড় করিয়ে দিত ঋণ দিয়ে—যা ছিল অনেক ব্যাংকের কাছে এক শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত। ওদের প্রায় ৯০ ভাগ খদ্দেরই ছিল প্রযুক্তি ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বাসিন্দা। এগুলোর রাখা আমানত ২০২০ সালে ছিল ৬২ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে প্রায় তিন গুণ বেড়ে হয়েছে ১৭৫ বিলিয়ন ডলার।

এ থেকে বোঝা যায় ব্যাংকটি টেকপ্রেমী উদ্যোক্তাদের কাছে বেশ প্রিয় হয়ে উঠেছিল। মার্কিন মুলুকে প্রায় ৪ হাজার ৫০০ ব্যাংকের মধ্যে এসভি বেশ তাড়াতাড়ি ১৬তম স্থান দখল করে। অ্যাসেট বা সম্পদ দাঁড়ায় ২০৯ বিলিয়ন ডলারে—যার বিপরীতে ১৭৫ বিলিয়ন ডলারের দায় থাকা মোটেও দুর্বলতার লক্ষণ নয়। কিন্তু আপাত সবলতার মধ্যেও যে দুর্বলতা লুকিয়ে থাকে, তা এসভি ব্যাংকের কাহিনি সবাইকে মনে করিয়ে দেয়। এ যেন রাজার বাড়ি নিমন্ত্রণ খেতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে দুর্ভাগা যুবকের অকালমৃত্যু।

ব্যাংক ধসের কারণ

এসভি ব্যাংক ধসের পেছনে আসল কারণ একটিই। ঝুঁকি অনুধাবনের অক্ষমতা। দেহের ভেতরে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা যেমন বাইরে থেকে অনেক সময় বোঝা যায় না। হঠাৎ করেই জলজ্যান্ত মানুষটি চলে গেল—সে রকম ব্যাপার ঘটেছে। ভালো চিকিৎসক দেখানো হয়নি। গত আট মাস এসভি ব্যাংকে রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট অফিসার ছিলেন না। তাই ঝুঁকির সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। আপাতদৃষ্টিতে স্থিতিপত্র বা ব্যালেন্স শিট ভালো ছিল।

আমানত সঞ্চয়কারীদের জন্য সম্পদ হলেও ব্যাংকের জন্য তা দায়। সে রকম ১৭৫ বিলিয়ন ডলার দায়ের বিপরীতে এসভি ব্যাংক প্রায় সমপরিমাণ মার্কিন সরকারি সিকিউরিটিজ বা বন্ড কিনেছিল, যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ। তবে সেগুলোর অধিকাংশই কেনা হয়েছিল কোভিডের কালে, যখন বন্ডের ওপর সুদ ছিল প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। কোভিডকালে প্রযুক্তি ফার্মগুলো তাদের বর্ধিত আয় দুই হাতে জমাতে থাকে এসভি ব্যাংকে।

সে সময় শেয়ারবাজার অনিশ্চিত থাকায় এসভি ব্যাংক প্রায় সব আমানত সরকারি বন্ডে ঢেলে দেয়। সেটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হলেও পরের সম্পূর্ণ পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগ পোর্টফোলিওতে যে পরিবর্তন আনতে হবে—সে কথা খুব একটা ভাবেননি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গ্রেগ বেকার। ভাবলেও বন্ডগুলোর বাজারদর ভালো ছিল না বিধায় ওগুলোর পক্বতা দিবস বা ম্যাচিউরিটি ডেট পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন অনেকটা নিশ্চিন্ত ভঙ্গিতে। সেটিই তার কাল হলো। ১০ মার্চ রাত পোহাবার আগেই শত শত ব্যাংক কর্মীর কপাল খেয়ে গ্রেগ বেকার নিজেও বেকার হয়ে গেলেন।

শুরুতে ভুল কোথায়

সম্পদ ও দায়ের সময়সীমার অসামঞ্জস্যতা ফাইন্যান্সের এক অন্যতম সমস্যা। স্বল্পমেয়াদি আমানতের টাকা দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করলে যেকোনো কোম্পানি তারল্যের সংকটে পড়বেই। এটি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো অহরহ করছে এবং পার পেয়ে যাচ্ছে। কারণ, এ থেকে সৃষ্ট খেলাপি ঋণ সরকারের প্রশ্রয়ে ছাইচাপা আগুন হয়ে বেঁচে আছে। এসভি ব্যাংক এই ‘মিসম্যাচ’ ক্রমাগত চালিয়ে গেছে।

করোনা–পরবর্তী উত্তরণের সময় নিয়োগ বাড়ে, বেতন বাড়ে, যা অর্থনীতিতে চাহিদা জাগিয়ে দ্রব্যমূল্য বাড়ায়। ওদিকে জোগানবিঘ্নতার কারণেও বাজারে দাম বাড়ে। এ দুইয়ের চাপে উন্নত দেশ তো বটেই, এমনকি পৃথিবীর সব দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। রাশিয়ার স্বৈরাচারী নেতা পুতিনের আকস্মিক ইউক্রেন আক্রমণে বিশ্বব্যাপী তেল, গ্যাস ও শস্যের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতির আগুনে ঘৃতাহুতি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির চাপে টেক কোম্পানিগুলো তাদের সঞ্চয় ভাঙার কাজে নেমে পড়ে। এসভি ব্যাংকের আমানতে চাপ বাড়ায় ওরা ওদের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের অংশ তথা বন্ড পক্কতা পূর্ণ হওয়ার আগে সেকেন্ডারি বাজারে বেচতে বাধ্য হয় এবং সেখান থেকেই ক্ষতির অশনিসংকেত ভেসে আসে।

মার্চের ৮ তারিখ বুধবার জানা গেল, ব্যাংকটি প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার ক্ষতি করেছে সিকিউরিটিজ বিক্রি করতে গিয়ে। ২০৯ বিলিয়ন ডলারের ব্যাংক তার সম্পদের শতকরা ১ ভাগেরও নিচে লোকসান করলে তা পুষিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু ইন্টারনেট ও দ্রুত যোগাযোগের জগৎ এসভির জন্য দুর্দশা ডেকে আনল। বৃহস্পতিবার টাকা তোলার ধুম। আতঙ্কগ্রস্ত খদ্দেররা সবাই এক গোয়ালের বাসিন্দা। জানাজানি হয়ে গেল। পাগলের মতো তাঁরা সব টাকা তুলে নিলেন। ব্যাংক থেকে উধাও ৪২ বিলিয়ন ডলার মেটাতে গিয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ধসে পড়ল সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক।

‘ব্যাংক রান’

এসভি ব্যাংকের কপালে যা ঘটল, এককথায় বলা হয় ‘ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাংক রান’—যেটি ঘটেছিল ত্রিশের মহামন্দার সময়। সবাই যখন একযোগে টাকা তোলার উন্মাদনায় মাতেন, তখন মন্দ ব্যাংক তো দূরের কথা, ত্রিভুবনের সবচেয়ে ভালো ব্যাংকটিও ধসে যাবে মাত্র ৩২ ঘণ্টায়।

কারণ, ব্যাংকের কাজ আর্থিক মধ্যস্থতা। পরের ধনে পোদ্দারির মন্ত্রে ওরা সঞ্চয় সংগ্রহ করে উদ্যোক্তাকে ঋণ দেয়। ব্যাংকগুলো জানে, সব সঞ্চয়কারী একসঙ্গে টাকা তুলতে আসেন না। তাই কিছু টাকা হাতে রেখে ব্যবসা চালায়। একে বলে তারল্য ব্যবস্থাপনা। কিন্তু দৈবাৎ যদি প্রায় সবাই টাকা তুলতে আসে, তাহলে যেকোনো ব্যাংক লাটে উঠতে বাধ্য—এটিই ‘ব্যাংক রান’।

উদ্ধারকারীরা

 ১০ মার্চ শুক্রবার সকালেই এসভি ব্যাংক অক্কা লাভ করার পর মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন বা এফডিআইসি এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। এরপর ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেরোমি পাওয়েল ও ট্রেজারি সেক্রেটারি বা অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন আমানতকারীদের আশ্বস্ত করেন যে তারা সবাই টাকা ফেরত পাবেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানান যে আমেরিকার অর্থনীতির ‘ফান্ডামেন্টালস’ বা মৌলিক ভিত শক্ত অবস্থায় আছে। ভীত হওয়ার কারণ নেই। এদিকে কংগ্রেসের আর্থিক খাতের কমিটি অর্থমন্ত্রীকে জেরা করার জন্য ডেকে পাঠালেন ক্যাপিটাল হিলে। এসভি ব্যাংকের সিইও এবং পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু মামলা জমা হয়ে গেছে। বিচার হবে।

বাংলাদেশের খেলাপি মামলার মতো ২৪ বছর ঝুলে থাকবে না। প্রেসিডেন্ট নির্দেশ দিয়েছেন দায়ী পরিচালক ও কর্মকর্তাকে খুঁজে বের করতে। আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে।

বন্ড বিক্রি ক্ষতিতে কেন

ধরা যাক, তিন বছর আগে প্রযুক্তি ব্যাংক খুব কম সুদ দেয়, এমন সরকারি বন্ড কিনেছে, যার নাম ‘শান্তি বন্ড’। ওটা ছিল ডিসকাউন্ট বন্ড যা পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করলে ১০০ ডলার পেত ২০২৫ সালে। কম সুদ হওয়ায় ধরি ওটা কেনা হয়েছিল ৯৫ ডলারে, যা এখন ৯৮ ডলার বাজারদর পাওয়ার কথা সেকেন্ডারি মার্কেটে। ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় ফেডারেল রিজার্ভ দফায় দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়েছে, যা করোনাকালের প্রায় শূন্য সুদহার থেকে বেড়ে প্রায় ৫ ভাগে উঠেছে। ফলে ২ বছর মেয়াদি সরকারি ডিসকাউন্ট বন্ডেরও আজকের বাজারদর হয়ে গেছে ৯৪ ডলার, যার নাম শক্তি বন্ড। ওটারও ২০২৫ সালে পরিপক্ব মূল্য হবে ১০০ ডলার।

ধরা যাক, শক্তি বন্ডের মালিক বণিক ব্যাংকেরও নগদ অর্থ দরকার। তাই ওরাও এসেছে সেকেন্ডারি বাজারে বন্ড বেচতে। শক্তি বন্ডের বাজারদর ৯৫ ডলার হওয়ায় কেউ শান্তি বন্ড কিনতে চাইছে না। শান্তি বন্ডের মালিক নগদ অর্থের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে ওর বন্ডও ৯৫ ডলারে বেঁচে দিল।

এতে ওর হিসাবে লোকসান হলো ৩ ডলার। বিলিয়ন ডলার বেচতে গেলে এই সামান্য ক্ষতিও বড় ক্ষতি হয়ে যায়। তা থেকেই প্রযুক্তি ব্যাংক প্রায় দুই বিলিয়ন লোকসান গুনেছে। সেটিও সে কাটিয়ে উঠতে পারত। কিন্তু গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান আতঙ্কের দাবানলে এক দিনেই ব্যাংক থেকে উঠে গেল ৪২ বিলিয়ন। এত নগদ টাকা তো ভল্টে থাকে না। তাই ধসে গেল পুরো রাজত্ব।

বাংলাদেশে ব্যাংক খাতের শিক্ষা

ইতিমধ্যে সরকারি নীতিনির্ধারকেরা আশ্বস্ত করেছেন যে আমেরিকার ব্যাংক ধসে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কথাটা ঠিক। কারণ, নেংটার নেই বাটপারের ভয়। এখানে ব্যাংক খাতের ‘সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দেব কোথা।’ এখানে ভুয়া বিনিয়োগকারী ভৌতিক অ্যাকাউন্ট দিয়ে কোটি টাকা তুলে নেয় ও বিদেশে পাচার করেন। না বিচার হয় খেলাপির কিংবা পাচারকারীর। ব্যাংক যখন ডুবতে বসে, তখন সরকার উদ্ধার করে। মন্ত্রীরা যুক্তি দেন—খোদ আমেরিকায় সরকার ব্যাংক উদ্ধার করে। আমরা করব না কেন?

এসডি ব্যাংকের ঘটনা আর বাংলাদেশের অন্য ১০টা ক্যানসার আক্রান্ত ব্যাংকের অবস্থা কোনোভাবেই এক নয়। এসভি ব্যাংক পরিবারকেন্দ্রিক পরিচালকবেষ্টিত কোনো গ্রাম্য দোকান নয়, ওটা থেকে পরিচালক বা তাঁদের খালাতো ভাইয়েরা অনামে–বেনামে লুটপাট করেননি, ওটা ভুয়া ঋণ দেয়নি, ওটার বিনিয়োগ বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ, যদিও টার্ম মিসম্যাচ করা হয়েছে—ওটার নেট ওয়ার্থ অর্থাৎ সম্পদ বিয়োগ দায়ের অঙ্ক আকস্মিক বিদায় দিবস পর্যন্তও ছিল ধনাত্মক।

এসব বিবেচনা থেকেই এফডিআইসি এসভি ব্যাংকের দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়েছে। মূল লক্ষ্য আমানতকারী গ্রাহকস্বার্থ সংরক্ষণ ও আর্থিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখা। ঋণ যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের তা কড়ায়–গন্ডায় শোধ করতে হবে। রাতারাতি খেলাপি বনে যাওয়া যাবে না। ঋণের সামান্য অংশ জমা দিয়েই ‘শুদ্ধ দেশপ্রেমী’ বা নীতিনির্ধারক সাজার সুযোগ করে দেবেন না অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন।

  • ড. বিরূপাক্ষ পাল যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট কোর্টল্যান্ডে অর্থনীতির অধ্যাপক