অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসার সুদ বা মুনাফার ওপর থেকে কর প্রত্যাহার করে নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এটি অনুসরণের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এনবিআরের এ উদ্যোগের ফলে দেশে বা বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি বা বিদেশিরা বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকের অফশোর ইউনিটে অর্থ জমা রাখলে প্রাপ্ত সুদের ওপর কোনো কর দিতে হবে না। আবার অফশোর ইউনিটগুলো দেশি বা বিদেশি যেকোনো উৎস থেকে অর্থ ধার নেওয়ার পর যে সুদ দেয়, তার জন্যও কর দিতে হবে না। ফলে সুদ বাবদ পাওয়া অর্থের পুরোটাই পাবে অর্থ ধার দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো।
অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের অভ্যন্তরে পৃথক এক ব্যাংকিং ব্যবস্থা। বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ প্রদান এবং বিদেশি উৎস থেকে আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসা হয় অফশোর ব্যাংকিংয়ে। অফশোর ইউনিটের ব্যবসার পুরোটাই হয়ে থাকে বৈদেশিক মুদ্রায়। ব্যাংকের প্রচলিত কোনো নিয়ম বা নীতিমালা অফশোর ব্যাংকিংয়ে প্রয়োগ হয় না। কেবল মুনাফা ও লোকসানের হিসাব যোগ হয় ব্যাংকের মূল হিসাবে।
দেশে বৈধ পথে ডলারের সরবরাহ বাড়াতে অফশোর ব্যাংকিং আইন প্রণয়নসহ নানা শর্ত শিথিল করেছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় এবার মুনাফা বা সুদের ওপর থেকে কর তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ডলার-সংকট ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর তহবিল দিতে অনীহার কারণে ব্যাংকগুলোর অফশোর ইউনিটের ব্যবসা অনেকটা থমকে গেছে। এরপরও বেড়েছে অফশোর ব্যাংকিংয়ে কিছু ব্যাংকের ঋণ।
জানা গেছে, ২০২১ সালের জুনে ব্যাংকগুলোর অফশোর ইউনিটের দেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৩ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। তখন খেলাপি ছিল মাত্র ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১ শতাংশের কিছুটা বেশি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অফশোর ইউনিটগুলোর ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩ হাজার ৮২৬ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণ বেড়ে ১ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকায় ওঠে, যা মোট ঋণের ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অফশোর ইউনিটের ঋণের ২২ শতাংশই সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের।