পরিচালকদের আপত্তির মুখে উত্তরা ফাইন্যান্সের এমডির পদত্যাগ

আর্থিক প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মিনহাজ আহমেদ পদত্যাগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। সেদিনই তা গ্রহণ করা হয়। আজ বুধবার তিনি আর অফিস করেননি। উত্তরা ফাইন্যান্সের ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ঝুঁকিবিষয়ক কর্মকর্তা (সিআরও) ফারজানা সুলতানা রহমানকে।

উত্তরা ফাইন্যান্সের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ মহিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এমডি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।

জানা যায়, গতকাল পরিচালনা পর্ষদের সভায় প্রতিষ্ঠানটিতে থাকা উত্তরা গ্রুপের আমানতের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির ২০২৩ সালভিত্তিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় এমডির নানা ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে কয়েকজন পরিচালক তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপরই তাঁকে পদত্যাগের সুযোগ দেওয়া হয়।

এ নিয়ে বক্তব্য জানতে সৈয়দ মিনহাজ আহমেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

জানা যায়, ২০২২ সালের অক্টোবরে উত্তরা ফাইন্যান্সে এমডি হিসেবে যোগ দেন সৈয়দ মিনহাজ আহমেদ। ওই বছরের জুনে উত্তরা ফাইন্যান্সের এমডি এস এম শামসুল আরেফিনকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে উত্তরা ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যানকে পরামর্শ দেওয়া হয়। উত্তরা ফাইন্যান্স থেকে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ আত্মসাতে অন্যদের সহায়তা ও আর্থিক প্রতিবেদনে তথ্য গোপনের অভিযোগে শামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে আসে, উত্তরা ফাইন্যান্সের ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও শেয়ারবাজারের মার্জিন ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৯৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৫০ কোটি টাকা জমা হয়েছে উত্তরা ফাইন্যান্সের বিভিন্ন পরিচালকের ব্যাংক হিসাবে। কোনো ধরনের আবেদন, প্রস্তাব বা অনুমোদন ছাড়া পরিচালকদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরাসরি টাকা ছাড় করা হয়েছে। এর বাইরে উত্তরা মোটরস ও উত্তরা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৩৩৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, যার কোনো অনুমোদন নেই।

এসব অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানটির এমডিকে অপসারণের পাশাপাশি নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।