বেসরকারি খাতের প্রথম প্রজন্মের এবি ব্যাংক নতুন চার সেবা পণ্য চালু করেছে। এর মধ্যে দুটি প্রচলিত ধারার পণ্য ও দুটি ইসলামি ধারার। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ‘এবি ডিরেক্ট’ নতুনরূপে চালু করেছে ব্যাংকটি। আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে এসব সেবার উদ্বোধন করেন ব্যাংকটির শীর্ষ কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংক খাত চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য ব্যাংকের মতো এবি ব্যাংকও চ্যালেঞ্জের মুখে। পার্থক্য হলো, এবি ব্যাংকে টাকা তুলতে এসে কেউ কখনো ফেরত যাননি। ব্যাংকের ৩০ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে আছে। এসব আদায়ে আইনি ও অন্যান্য পদক্ষেপ চলছে, আগামী মার্চের মধ্যে এর ফলাফল দেখা যাবে। এখন নতুন আমানত বাড়িয়ে ব্যাংকের উন্নতি করতে নতুন আমানত পণ্য চালু করা হয়েছে। সামনে এবি ব্যাংক আমাদের ব্যাংক নামে পরিচিতি পাবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক আমানত হিসাব ‘এবি ইলহাম’ দিচ্ছে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিককে দৈনিক স্থিতির ওপর আকর্ষণীয় মুনাফা লাভের সুযোগ। ব্যক্তি ও যৌথ নামে এই হিসাব খোলা যাবে। ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে এই হিসাব খুলতে হবে। এটিএম থেকে দৈনিক সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা উত্তোলনের সুযোগ পাবেন গ্রাহকেরা। ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক হিসাব ‘এবি আমানী’ হলো নারী গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সঞ্চয়ী হিসাব, যেখানে বিনা খরচে বিমা–সুবিধাসহ লকার চার্জে আছে ২৫ শতাংশ ছাড়।
এ ছাড়া মাসিক সঞ্চয়ের ভিত্তিতে যেকোনো আমানতকারীকে কোটিপতি হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে এসেছে এবি কোটিপতি আমানত স্কিম, যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই হিসাব খুলতে পারবেন। ৫ থেকে ২০ বছর মেয়াদে কোটিপতি হিসাব খোলা যাবে, সে হিসাবে প্রতি মাসে টাকা জমা দিতে হবে। এ ছাড়া এবি স্বাচ্ছন্দ্য নামে চলতি হিসাব–সুবিধা চালু করেছে ব্যাংকটি, যেখানে গ্রাহকেরা দৈনিক স্থিতির ওপর মুনাফা পাবেন। এই হিসাবধারী চাকরিজীবীদের অন্য ব্যাংকে বেতন হলেও তার ৬০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা অগ্রিম ধার নিতে পারবেন।
এ ছাড়া এবি ডিরেক্ট ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকেরা ঘরে বসে আধুনিক সব ব্যাংকিং–সুবিধা পাবেন বলে জানানো হয়। ভবিষ্যতে এর মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ চালুর পরিকল্পনা করছে ব্যাংকটি।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন এবি ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ব্যাংক খাতের ওপর অনাস্থার কারণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এবি ব্যাংক একসময় ব্র্যান্ড ব্যাংক ছিল, সেটা এবি ব্যাংক ধরে রেখেছে। সারা দেশে ব্যাংকের উপস্থিতি আছে। আমরা এর মাধ্যমে সারা দেশে নতুন সেবা ছড়িয়ে দিতে চাই।’
ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, এবি ব্যাংক ২.০ গঠনের কাজ চলছে। সামনে পরিস্থিতির উন্নতির চিত্র দেখা যাবে। সে জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের পরিচালক ফজলুর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক জেড এম বাবর খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।