সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন কিছু কর্মকর্তা। যেসব কর্মকর্তা গত কয়েক বছরে ব্যাংক খাতের নানা অনিয়মে চুপ ছিলেন, তাঁরাই এখন বিভিন্ন দাবি আদায়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। অফিস সময়ে সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। অভিযোগ উঠেছে, ব্যাংক খাত সংস্কারে বাংলাদেশ ব্যাংক যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন এসব কর্মকর্তা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ পদায়নেও হস্তক্ষেপ করছেন কেউ কেউ।
আগামীকাল মঙ্গলবার মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন এসব কর্মকর্তা। এই মানববন্ধনের কারণ উল্লেখ করে অফিসার্স কাউন্সিলের পক্ষ থেকে কর্মকর্তাদের গ্রুপে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে, সেখানে বলা হয়, আগস্টভিত্তিক পদোন্নতি নিয়ে কাউন্সিল কাজ করছে। এ ছাড়া কর্মীদের সর্বোচ্চ উৎসাহ বোনাস, আগের নীতির কারণে যাঁরা বঞ্চিত ছিলেন তাঁদের পদোন্নতির ব্যবস্থা, অযৌক্তিকভাবে যাঁদের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করা হয়েছিল তা পুনর্বহাল, ওপরের পদে পদোন্নতির জন্য ব্যাংকিং ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করার বিধান বাতিল ও বিদেশ ভ্রমণ নীতিমালা সহজ করার কথা বলা হয়েছে।
এসব কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেন। সেদিন তাঁরা ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ নিয়ে নানা দাবি তুলে ধরেন। গত সপ্তাহে গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে কর্মকর্তাদের একটি দল দেখা করে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবি জানায়। তখন গভর্নর জানিয়ে দেন, চাপ দিয়ে অযৌক্তিক কিছু আদায় করা যাবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, আব্দুর রউফ তালুকদার ও ফজলে কবির গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে দিয়েছেন। সেটা ধীরে ধীরে ফেরত দেওয়া হবে। তবে সরকার পরিবর্তনের পর কিছু কর্মকর্তার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ সবাইকে হতাশ করেছে।
সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে চরম অস্থিরতা শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ একদল কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, চার ডেপুটি গভর্নর, উপদেষ্টা ও আর্থিক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করেন। একপর্যায়ে তাঁরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল ভবনে অবস্থিত গভর্নরের ফ্লোরে ঢুকে পড়েন এবং একজন ডেপুটি গভর্নরকে সাদা কাগজে সই করতে বাধ্য করেন। পরে দুজন ডেপুটি গভর্নর ও আর্থিক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এরপর থেকে কিছু কর্মকর্তা নানা দাবি পেশ করতে শুরু করেন।