চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ২০ দিনে দেশে ১৫৩ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। গত বছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১১২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত বছরের আগস্টের তুলনায় চলতি আগস্টের প্রথম ২০ দিনে প্রবাসী আয় ৪১ কোটি ডলার বা প্রায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ব্যাংকাররা বলছেন, প্রবাসী আয়ের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাস শেষে প্রবাসী আয় ২৫০ কোটি ডলার কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত প্রবাসী আয় আসার যে ধারা তাতে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৭ কোটি ডলারের বেশি দেশে আসছে। বর্তমান এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয় ২৩৫ কোটি ডলার ছাড়াবে। যদি সেটিও হয়, তাহলে চলতি বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসার রেকর্ড হবে আগস্টে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে গত জুনে, ২৫৫ কোটি ডলার। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল মে মাসে, ২২৫ কোটি ডলার। আর সর্বশেষ জুলাইয়ে এসেছিল ১৯১ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়।
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩তম গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। গভর্নরের দায়িত্ব নিয়ে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি উন্নয়নে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ব্যাংক খাতে টেকসই সংস্কারের জন্য ব্যাংক কমিশন গঠন।
এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার–সংকট কাটাতে আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে। তাতে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের ক্রলিং পেগ ব্যবস্থায় ডলারের মধ্যবর্তীর দাম ১১৭ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলো ডলারের দাম কিছুটা বেশি দিতে পারবে।
ব্যাংকাররা বলছেন, বৈধ পথে প্রবাসী আয় আনাকে উৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে চলতি মাসের বাকি দিনগুলোয় ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার আসা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০ আগস্ট এক দিনেই ব্যাংকের মাধ্যমে বৈধ পথে প্রায় ১১ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে তাই প্রবাসী আয় ২৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।