খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে ইতিমধ্যে ১২৫ টাকায় উঠে গেছে। এমন সময়ে মানি চেঞ্জারদের পক্ষ থেকে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১১৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমসিএবি) পক্ষ থেকে সব মানি চেঞ্জারকে চিঠি দিয়ে দাম নির্ধারণের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার জন্য মানি চেঞ্জারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তাদের বলা হয়, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাংকের চেয়ে সর্বোচ্চ ১ টাকা বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করা যাবে। সে অনুযায়ীই এমসিএবি প্রতি ডলারের দাম ১১৯ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
এমসিএবির চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১১৯ টাকা নির্ধারণ করা হলো। কেউ এই নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি এম এস জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় আমরা এই চিঠি দিয়েছি। কেউ না মানলে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে ধরা পড়লে তার লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। এতে কারও কিছু করার থাকবে না।’
তবে দুটি মানি চেঞ্জারের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে ডলার বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। যাঁরা ডলার কিনতে চাইছেন তাঁদের কাছ থেকে বেশি দামে “অনানুষ্ঠানিকভাবে” বিক্রি করা হচ্ছে। চাপাচাপিতে ডলারের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে বাজার ঠিক রাখা যাবে না।’
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় চিঠি দেওয়া হলেও বাজার পরিস্থিতি ভিন্ন। আজ ঢাকায় মতিঝিল ও গুলশানের বিভিন্ন মানি চেঞ্জার ও খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১২৪-১২৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
খোলাবাজারের ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডলারের সরবরাহ নেই। যা মিলছে তা–ও ১২৪ টাকা ৫০ পয়সার নিচে কেনা যাচ্ছে না। ফলে ১২৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। দিন দিন ডলারের বাজারে অস্থিতিশীলতা বাড়ছে।’
জানা গেছে, খোলাবাজারে দুই সপ্তাহ আগে প্রতি ডলার ১১৮-১১৯ টাকার মধ্যে বেচাকেনা হতো। নগদ ডলারের দাম কয়েক মাস ধরে এ রকমই ছিল। তবে ছাত্র আন্দোলনের পর গত সোমবার তা বেড়ে ১২২ টাকায় ওঠে, যা এখন ১২৫ টাকা হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অবশ্য মনে করেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণেই মূলত খোলাবাজারে প্রভাব পড়েছে।
খোলাবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে ফেরার সময় প্রবাসীরা নিজেদের সঙ্গে করে যে ডলার নিয়ে আসেন, সেগুলো খোলাবাজারে বিক্রি হয়; কিন্তু এখন বিদেশ থেকে মানুষ আসা কমে যাওয়ায় ডলারের সরবরাহ কমেছে। এতে সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। অন্যদিকে প্রবাসী আয় কমে হুন্ডি বাড়াতেও ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে।