অবসরভোগী মানুষের জন্য বহুল প্রচলিত ‘পেনশনার সঞ্চয়পত্র’ কেনার সীমা বাড়ানোর কথা ভাবছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। ৫০ লাখ টাকা থেকে এ সীমা বাড়িয়ে এক কোটি টাকা করার প্রস্তাব করেছে অধিদপ্তর। পাশাপাশি পেনশন সঞ্চয়পত্রের মুনাফা তিন মাসের পরিবর্তে মাসে মাসে পরিশোধেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) জ্যেষ্ঠ সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সঞ্চয় অধিদপ্তর পরিদর্শনে গেলে তাঁর কাছে এ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। অবসরভোগীদের প্রয়োজন ও চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে এ প্রস্তাব করা হয়েছে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বহুল প্রচলিত ‘পরিবার সঞ্চয়পত্র’ কেনার ক্ষেত্রে পুরুষের বয়সসীমা কমানো যায় কি না, সেই প্রস্তাবও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আইআরডি সচিবের কাছে তুলে ধরা হয়। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় এখনই তা সম্ভব নয় বলে তাৎক্ষণিকভাবেই তা নাকচ করে দেওয়া হয়। তবে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ক্রয়সীমা বাড়ানো ও মুনাফা তিন মাসের পরিবর্তে মাসে মাসে পরিশোধের বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ক্রয়সীমা বাড়ানো ও মাসে মাসে মুনাফা দেওয়ার বিষয়টি আমাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। এ ছাড়া অন্য কোনো সঞ্চয়পত্রের বিষয়ে কোনো প্রস্তাব ছিল না।মো. শাহ আলম, সঞ্চয় অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক
জানতে চাইলে সঞ্চয় অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মো. শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ক্রয়সীমা বাড়ানো ও মাসে মাসে মুনাফা দেওয়ার বিষয়টি আমাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। এ ছাড়া অন্য কোনো সঞ্চয়পত্রের বিষয়ে কোনো প্রস্তাব ছিল না। তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় আমাদের পক্ষ থেকে নানা প্রস্তাব করা হয়, সব প্রস্তাব যে অনুমোদিত হয়, তা–ও নয়। তাই এখন যে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলোর বিষয়েও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
সঞ্চয় অধিদপ্তরের বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, বর্তমানে ‘পেনশনার সঞ্চয়পত্রে’ প্রতি তিন মাস অন্তর মুনাফা পান এ সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকেরা। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেক অবসরভোগী এ মুনাফা তিন মাসের পরিবর্তে মাসে মাসে দেওয়ার দাবি জানান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা মাসে মাসে পরিশোধের প্রস্তাব করেছে সঞ্চয় অধিদপ্তর। একই সঙ্গে ৫০ লাখ টাকার ক্রয়সীমা বাড়িয়ে এক কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ক্রয়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তিহচ্ছে, এ সীমা আরোপের পর সরকারের পক্ষ থেকে দুটি পে–স্কেল বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাই অনেকের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। আবার অবসরভোগীদের একটি বড় অংশ যেহেতু এ ধরনের সঞ্চয়পত্রের আয়ের ওপর নির্ভরশীল, তাই তাদের বিনিয়োগসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতিবছর যত সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়, তার মধ্যে ৭ থেকে ৮ শতাংশ পেনশনার সঞ্চয়পত্র।