গ্রাহকেরা অপ্রয়োজনে দুর্বল ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গেলে সমস্যা বাড়বে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ১০-১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। এসব ব্যাংককে এখন নিবিড়ভাবে তদারক করা হচ্ছে। প্রতিদিন আমানত, ঋণ, ঋণপত্রসহ (এলসি) ২০টি সূচকের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। স্বস্তির বিষয় হলো, এত কিছুর পরও এসব ব্যাংকে ৮০০ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। মানুষ এখন এই ব্যাংকগুলোতে টাকা জমা করছেন।
গভর্নর বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে এসব ব্যাংককে কীভাবে সহায়তা দেওয়া যায়, তা দেখছি। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের সহায়তা প্রয়োজন হবে না। ফলে সহায়তার আকার অর্ধেক কমে গেছে। এসব ব্যাংকের আমানতকারীরা ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছেন। এক বছর সময় দিলে এই ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াবে। তবে গ্রাহকেরা অপ্রয়োজনে টাকা উত্তোলন করতে গেলে সমস্যা বাড়বে।’
আজ মঙ্গলবার প্রথম আলো আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতকে কোথায় দেখতে চাই’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংক খাতের সংস্কারে আগে কমিশন করার পরামর্শ দিতাম। কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে দেখলাম, কমিশন করলে ছয় মাস সময় লেগে যাবে। এর মধ্যে টাস্কফোর্স গঠন করে কাজ শুরু করলে তা অনেকটা এগিয়ে যাবে। আর্থিক খাতে সমস্যা কী সেটা জানি। এ জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছি। তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে, ইতিমধ্যে একটি গঠন করা হয়েছে।’
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ব্যাংক আইন সংস্কার এখনই হবে নয়। তিন টাস্কফোর্সের সুপারিশের পর আমরা একসঙ্গে আইন পরিবর্তনের জন্য সরকারের কাছে যাব। দুর্বল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কমে আসুক, এটা আমার চাওয়া। বিশ্ববাজারে এসব ব্যাংকের কোনো দাম নেই। অনেক দেশে ৬০টি ব্যাংক ছিল, তা ১৫টিতে নামিয়ে এনেছে। কিন্তু দেশে এমন কিছু করতে হলে স্থানীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয় আছে।’
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংক একীভূত বা অধিগ্রহণ স্বেচ্ছায় হলে ভালো। না হলে সরকারি পর্যায়ে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দেশে পুনর্গঠন হয়ে ইস্টার্ন ব্যাংক গঠন একটি ভালো উদাহরণ। এ জন্য সময় প্রয়োজন হবে। এক-দুই মাসে এসব বাস্তবায়িত হবে না। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য একধরনের নীতি নেওয়া হবে। তাদের ব্যবসার ওপর নির্ভর করে নীতি সংশোধন করা হবে।