এবার ছোট অঙ্কের ডিজিটাল ঋণ আনছে ঢাকা ব্যাংক

ঢাকা ব্যাংক
ঢাকা ব্যাংক

হঠাৎ জরুরি প্রয়োজনে ছোট অঙ্কের ঋণের জন্য এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করেন অনেক গ্রাহক। ব্যাংকে ঋণের জন্য গেলে ঋণ পেতে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। কখনো কখনো এক মাস পর্যন্ত সময় লাগে ঋণ পেতে। আবার আত্মীয়স্বজনের কাছেও সবাই মুখ ফুটে ধারের কথা বলতে পারেন না। এ ধরনের গ্রাহকের জরুরি প্রয়োজনে ছোট অঙ্কের ঋণের চাহিদা মেটাতে বেসরকারি খাতের ঢাকা ব্যাংক চালু করতে যাচ্ছে তাৎক্ষণিক ডিজিটাল ঋণ সুবিধা। এর মাধ্যমে কোনো নথিপত্র ছাড়াই অ্যাপের মাধ্যমে ঋণের আবেদন করা যাবে। ঋণও মিলবে তাৎক্ষণিকভাবে, অ্যাপের মাধ্যমে। এ জন্য ব্যাংকটি চালু করতে যাচ্ছে বিশেষ অ্যাপস ‘ই-রিন’। তবে এই সুবিধা পাবেন শুধু ঢাকা ব্যাংকের গ্রাহকেরাই।

জানা গেছে, ই-রিন অ্যাপের মাধ্যমে এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক ঋণ কার্যক্রম শুরু করেছে ব্যাংকটি। এতে আবেদন করতে পারছেন ব্যাংকটির নির্দিষ্ট কিছু গ্রাহক। আপাতত সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ মিলছে এ সুবিধার আওতায়। ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। ইতিমধ্যে প্রায় এক হাজার গ্রাহক এই ঋণ নিয়েছেন। ঋণের কিস্তিও তাঁরা নিয়মিত শোধ করছেন। অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ অনুমোদনের পর ঋণের টাকা চলে যাচ্ছে গ্রাহকের ঢাকা ব্যাংক হিসাবে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষে ব্যাংকের সব গ্রাহক এই ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে জানান ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে ঋণের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে তিন থেকে ছয় মাস।

আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার অংশ হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কাগজপত্র ছাড়াই ডিজিটাল এ ঋণ-সুবিধা চালু করেছে ব্যাংকটি। এ ঋণ বর্তমানে পোশাকশ্রমিক বা যেসব পেশায় ব্যাংকের মাধ্যমে মজুরি দেওয়া হয়, এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি যাঁরা ঢাকা ব্যাংকের গ্রাহক, তাঁদের সবার জন্য শিগগিরই এ ঋণ উন্মুক্ত করা হবে।

ই-রিন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ আবেদন করতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র ও আয়ের প্রমাণপত্র ডিজিটাল পদ্ধতিতে জমা দিতে হবে। এরপরই ঋণ নিশ্চয়তার চিঠি আসবে গ্রাহকের মেইলে। ঋণ অনুমোদন হলে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে ঋণের টাকা জমা হবে গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে। আপাতত এই ঋণ পেতে ই-রিনে আবেদন করতে হলেও ভবিষ্যতে ঢাকা ব্যাংক গো অ্যাপেও এই সেবা মিলবে।

ব্যাংকাররা বলছেন, ইতিমধ্যে ঢাকা ব্যাংকসহ অনেক ব্যাংক ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যাংক হিসাব খোলা ও আমানত জমার সেবা চালু করেছে। এখন ঋণসেবা চালু করলে তা অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করবে।

ঢাকা ব্যাংকের রিটেইল ব্যবসা বিভাগের প্রধান এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংকের গ্রাহকেরা যাতে কোনো ভোগান্তি ছাড়া সহজেই ছোট অঙ্কের ঋণ পান, এ জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা ব্যাংক। পরীক্ষামূলকভাবে এ ঋণটি চালু করে আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি মিললে সব গ্রাহকের জন্য সেবাটি উন্মুক্ত করা হবে।’

এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘নতুন এই সেবা চালু হলে আশা করি আমাদের ব্যাংকের গ্রাহকসংখ্যা বাড়বে। তাৎক্ষণিক ক্ষুদ্রঋণের অন্যতম মাধ্যম হবে ঢাকা ব্যাংক। জরুরি প্রয়োজনে ছোট অঙ্কের ঋণ পেতে গ্রাহকের ভোগান্তি কমে আসবে। নথিপত্র নিয়ে ব্যাংকে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না।’