শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্র খাতের একমাত্র ব্যাংকটি।
পর্যাপ্ত যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ ও দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের মাশুল দিচ্ছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক। এসব ঋণ এখন আদায় করতে পারছে না। ফলে বাড়ছে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ। গত জুলাই-জুন সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। গত জুন শেষে ব্যাংকটির ঋণের ১৮ শতাংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে।
এদিকে ব্যাংকটি আগ্রাসীভাবে সিংহভাগ ঋণ তুলে দিয়েছে বড় গ্রুপগুলোর হাতে। এসব অনেক ঋণ সময়মতো আদায় হচ্ছে না। ব্যাংকটির ঋণ দিয়ে যে সুদ আয় হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি সুদ দিতে হচ্ছে আমানতকারীদের। এর ফলে মূল সুদ ব্যবসায় ব্যাংকটি লোকসান করছে। ঋণের বাইরে অন্য বিনিয়োগ ও সেবা থেকে আয় করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও খরচ মেটাতে হচ্ছে ব্যাংকটিকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাড়সুবিধা নিয়ে ২০২২ সালে ২১ কোটি টাকা মুনাফা দেখিয়েছে। তবে শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত রাষ্ট্র খাতের একমাত্র ব্যাংকটি। ব্যাংকটির ৭ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত।
ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য বিনিয়োগের বিপরীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে পারছে না। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাড়তি সময় নিচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের ব্যাংক আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় ২০০৫ সালে রূপালী ব্যাংককে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরের বছর ব্যাংকটির শেয়ার বিক্রির জন্য বিভিন্ন দেশে রোড শো করে বেসরকারীকরণ কমিশন। ওই সময়ে একজন সৌদি বিনিয়োগকারী ব্যাংকটি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি এগোয়নি। এখন একদিকে বড় কয়েকজন গ্রাহক ও অন্যদিকে বড় খেলাপি—এসব নিয়েই হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকটি। যে ফাঁদে পড়েছে, তাতেই আটকা পড়েছে। বের হতে পারছে না। ব্যবসা বাড়াতে নতুন করে কার্যকর কোনো পরিকল্পনাও করতে পারছে না।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে এক বছর আগে যোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তিনি সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সময়ে খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে। মুনাফাও যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি হয়েছে। নতুন করে বড় কোনো গ্রুপকে ঋণ দেওয়া হয়নি। এসএমই ও কৃষি ঋণ দেওয়া অব্যাহত আছে। চেষ্টা করে যাচ্ছি বড় গ্রুপগুলো থেকে ঋণ নিয়মিত আদায় করার। যেসব পুরোনো সমস্যা আছে, তা তো অস্বীকার করা যাবে না। তবে নতুন করে কোনো সমস্যা যাতে না হয়, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
ব্যাংকটির ২০২০ সালের জুনে আমানত ছিল ৪৭ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা, গত জুনে যা বেড়ে হয়েছে ৬৬ হাজার ৬০২ কোটি টাকা। অন্যদিকে একই সময়ে ঋণ ৩১ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। তিন বছরে আমানত ১৯ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা বাড়লেও ঋণ বেড়েছে ১৩ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এই সময়ে এসে ব্যাংকটি ঋণে আগ্রাসী ভাব বন্ধ করেছে। নতুন ঋণ প্রদান প্রায় বন্ধ করলেও খেলাপি ঋণ থামিয়ে রাখতে পারেনি। ২০২০ সালের জুনে খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা, যা গত জুনে বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
আমার সময়ে বড়দের কোনো ঋণ দিইনি। ব্যাংক বাঁচাতে হলে বড় ঋণ বন্ধ করে দিতে হবে। পুরোপুরি এসএমই ও কৃষি খাতে ঋণে ঝুঁকতে হবে। এমন নতুন গ্রাহক খুঁজে বের করতে হবে। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙা হবে। প্রয়োজনে গ্রুপ করে ও এনজিওর মাধ্যমে ঋণ দিতে হবে।সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ
ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য বিনিয়োগের বিপরীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে পারছে না। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাড়তি সময় নিচ্ছে। ২০২২ সালের বার্ষিক হিসাব চূড়ান্তের জন্য ব্যাংকটিকে ৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংকটি মুনাফা থেকে ২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা রাখতে সক্ষম হয়। বাকি ৬ হাজার ৮৪ কোটি টাকা নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার জন্য ব্যাংকটিকে চলতি বছর পর্যন্ত সময় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে ব্যাংকটি ২১ কোটি টাকা মুনাফা করার সুযোগ পেয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সময়ে বড়দের কোনো ঋণ দিইনি। ব্যাংক বাঁচাতে হলে বড় ঋণ বন্ধ করে দিতে হবে। পুরোপুরি এসএমই ও কৃষি খাতে ঋণে ঝুঁকতে হবে। এমন নতুন গ্রাহক খুঁজে বের করতে হবে। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙা হবে। প্রয়োজনে গ্রুপ করে ও এনজিওর মাধ্যমে ঋণ দিতে হবে।’
ব্যাংকটির জুনভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, খেলাপি গ্রাহকের তালিকায় শীর্ষ রয়েছে চট্টগ্রামের নুরজাহান গ্রুপ। ভোগ্যপণ্য ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এই গ্রুপের চার প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকটির পাওনা ৬২৯ কোটি টাকা। এরপরই বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৬৭ কোটি টাকা। এ এ নিট স্পিন লিমিটেডের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৮২ কোটি টাকা। ভার্গো মিডিয়ার (চ্যানেল ৯) খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৪২ কোটি টাকা। এইচআর স্পিনিং মিলের খেলাপি ঋণ ১৯৯ কোটি টাকা ও ইব্রাহিম কনসোর্টিয়ামের ১৯২ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের এস এ গ্রুপের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৯০ কোটি টাকা। এ ছাড়া এম রহমান স্টিলের ১৮৮ কোটি টাকা, জাজ স্পিনিংয়ের ১৮৪ কোটি টাকা, পান্না টেক্সটাইলের ১৭৩ কোটি টাকা, এইচজেড অ্যাগ্রোর ১৬৭ কোটি টাকা, হিমালয় পেপার অ্যান্ড বোর্ডের ১৬৫ কোটি টাকা, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১৬৪ কোটি টাকা ও চৌধুরী লেদারের ১৬১ কোটি টাকা।
এ ছাড়া শীর্ষ-২০ খেলাপি গ্রাহকের তালিকায় আরও রয়েছে সফিক স্টিল, মাবিয়া শিপ ব্রেকার্স, ওয়াটার হেভেন করপোরেশন, ক্রিস্টাল স্টিল অ্যান্ড শিপ, বিউটিফুল জ্যাকেট ও ঢাকা টেক্সটাইল লিমিটেড।
শীর্ষ-২০ খেলাপির কাছে ব্যাংকটির আটকে আছে ৪ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। এসব গ্রাহকের কাছ থেকে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে আদায় হয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে এ এ নিট স্পিন লিমিটেড একাই জমা দিয়েছে ৩৯ কোটি টাকা, পান্না টেক্সটাইল জমা দিয়েছে ১৩ কোটি টাকা।
অন্য খেলাপি গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে এমবি স্পিনিং, নাসরিন জামান নিটিং, জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ, প্রাইস ক্লাব জেনারেল ট্রেডিং, এবিএস গার্মেন্টস, ড্রিম নিটিং, দেশ জুয়েলার্স, জেড অ্যান্ড জে ইন্টারন্যাশনাল ও ক্যাপিটাল অ্যাসেটস প্রোডাকশন লিমিটেড। এর মধ্যে জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজের মালিক ক্যাসিনো–কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সেলিম প্রধান ও দেশ জুয়েলার্সের মালিক ফেনীর আলোচিত আনোয়ার হোসেন ওরফে গোল্ড আনোয়ার। এই দুই প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকের পাওনা ১৮০ কোটি টাকা।
ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের নিচে লোকাল অফিস। এই অফিসের ঋণ গত বছরের ডিসেম্বরে ছিল ১৪ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এরপর মতিঝিল করপোরেট শাখায় ঋণ ছিল ২ হাজার ১১২ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। রূপালী সদন করপোরেট শাখায় ঋণ ছিল ১ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। খুলনার দৌলতপুর করপোরেট শাখায় ঋণ ছিল ২ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ। রমনা করপোরেট শাখায় ঋণ ছিল ৯০৮ কোটি টাকা বা ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
ব্যাংকটির প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সাল শেষে শীর্ষ গ্রাহক ছিল মাদার টেক্সটাইল মিলস। প্রতিষ্ঠানটির ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। বেসরকারি গ্রাহকদের মধ্যে এরপর বেক্সিমকো লিমিটেডের ঋণ ৯৯৫ কোটি টাকা, ক্রোনি অ্যাপারেলসের ৮৪০ কোটি টাকা, এম এস এ টেক্সটাইলের ৭০৬ কোটি টাকা ও জুট টেক্সটাইল মিলের ৬৭৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া অন্য শীর্ষ গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে বদর স্পিনিং, অবন্তী কালার টেক্স, ইকো কটন মিলস, উত্তরা পাট সংঘ, দবিরুদ্দিন স্পিনিং, গ্রিন প্লানেট রিসোর্ট, ঢাকা ট্রেডিং হাউস, নোমান স্পিনিং ও সাদ মুসা টেক্সটাইল। এসব গ্রাহকের কাছে ব্যাংকটির ঋণ ১২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৭ শতাংশ।
ব্যাংকটি শুধু ঋণ দিয়ে আটকে গেছে, বিষয়টি তা নয়। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখা টাকাও ফেরত পাচ্ছে না রূপালী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫২৮ কোটি টাকা ফেরত পাচ্ছে না। এসব ঋণ ২০১৯ সালের পর নবায়নও করা হয়নি। এর মধ্যে পিপলস লিজিংয়ে ১২০ কোটি টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে ১০৭ কোটি টাকা, এফএএস ফাইন্যান্সে ১০৩ কোটি টাকা, প্রিমিয়ার লিজিংয়ে ৫৫ কোটি টাকা, ফার্স্ট ফাইন্যান্সে ৫৩ কোটি টাকা, বিআইএফসিতে ৫০ কোটি টাকা ও ফারইস্ট ফাইন্যান্সে ৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় ছিল আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার। তিনি যখন এসব প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে টাকা বের করেন, ঠিক তখনই রূপালী ব্যাংক এসব প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি পক্ষ এসব প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেওয়ার জন্য রূপালী ব্যাংককে চাপ দেয়।
গত বছর শেষে সব মিলিয়ে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকটির বিনিয়োগ ছিল ১ হাজার ৩২২ কোটি টাকা।
রূপালী ব্যাংকে গত বছর শেষে ডলি কনস্ট্রাকশনের ঋণ ছিল ৫৭০ কোটি টাকা, যার পুরোটাই খেলাপি। এটি মূলত ঠিকাদার ও নির্মাণ খাতের প্রতিষ্ঠান। সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর চাপে এই প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করে রূপালীসহ আরও কয়েকটি সরকারি ব্যাংক। এখন রূপালী ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় রূপালী ব্যাংকের পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির ৪৮৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে মতিঝিল করপোরেট শাখা থেকে ৭৫২ কোটি টাকা উত্তোলন করেন। বিভিন্ন সময়ে সুদসহ ৩০৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেন। সুদসহ বাকি ৪৮৯ কোটি টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন।
মামলার আসামিরা হলেন ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডলি আক্তার, রূপালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক খালেদ হোসেন মল্লিক, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সোলায়মান, স্থানীয় কার্যালয়ের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. গোলাম সারোয়ার, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, পল্টন শাখার উপমহাব্যবস্থাপক (সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মতিঝিল করপোরেট শাখা) এ এস এম মোরশেদ আলী ও জিওগ্রাফ সার্ভে করপোরেশন লিমিটেডের মালিক মো. পারভেজ বিন কামাল।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন, এই ঋণের সঙ্গে যুক্ত অন্য কর্মকর্তারাও আতঙ্কে দিন পার করছেন। ফলে স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্র খাতের ব্যাংকগুলোর সমস্যা হলো ভালো গ্রুপের পরিবর্তে প্রভাবশালীরা এসব ব্যাংকের মূল গ্রাহক। আবার যাঁরা খেলাপি, তাঁরাও প্রভাবশালী। এসব ব্যাংকে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক দুটি প্রতিষ্ঠানই খবরদারি করে। ফলে তাদেরও খুশি রাখতে হয়। এসব ব্যাংকের দক্ষতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে একক ক্ষমতা দিতে হবে। গ্রাহক, ব্যবস্থাপনা নেতৃত্ব বিবেচনায় দক্ষতাকে প্রাধান্য দিতে হবে; যাতে নতুন করে কোনো দুর্ঘটনা না হয়। বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পুরোনো সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। না হলে আরও সমস্যা বাড়বে।