ব্যাংকগুলোর অফশোর ইউনিট বিদেশ থেকে যে আমানত বা তহবিল আনবে, তা অবাধে ব্যবহার করতে পারবে মূল ব্যাংক। পাশাপাশি ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের আমানত বা দায়ের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে নগদ অর্থ জমা (সিআরআর) রাখতে হয়, সেটিও এখন আর দরকার হবে না। অফশোর ব্যাংকিংয়ের জন্য এই সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত টাকা ও ডলার-সংকট কাটাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। কারণ, সিআরআর রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ায় এ বাবদ জমা রাখা টাকা ফেরত পাবে ব্যাংকগুলো।
গত বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘অফশোর ব্যাংকিং আইন ২০২৪ ’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর গতকাল এই সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশে প্রথমবারের মতো অফশোর ব্যাংকিং আইন করতে যাচ্ছে সরকার।
প্রস্তাবিত আইনানুযায়ী, অফশোর ব্যাংকিংয়ের জন্য লাইসেন্স পাওয়া ব্যাংকগুলো অনিবাসী বাংলাদেশি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় আমানত গ্রহণ করতে পারবে ও ঋণ দিতে পারবে। আর এই অফশোর ব্যাংকিং লেনদেনে যে সুদ আসবে, তার ওপর কোনো কর আরোপ করা হবে না।
সারা বিশ্বে অর্থ পাচারের জন্য অফশোর ব্যাংকিং বেশ আলোচিত। অন্য দেশগুলো যখন অফশোর ব্যাংকিং থেকে কিছুটা সরে আসছে, তখন বাংলাদেশ এদিকে জোর দিচ্ছে। ২০২১ সালের জুনে ব্যাংকগুলোর অফশোর ইউনিটের দেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৩ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। তখন খেলাপি ছিল মাত্র ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১ শতাংশের কিছুটা বেশি।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অফশোর ইউনিটগুলোর ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩ হাজার ৮২৬ কোটি টাকায়। আর খেলাপি ঋণ বেড়ে ১ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকায় ওঠে, যা মোট ঋণের ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।