বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। করোনার মধ্যে প্রবাসী আয়ে বড় স্রোত ও রপ্তানি আয়ের কারণে রিজার্ভ বেড়েই চলছে। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ১২০ কোটি ডলার।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই রিজার্ভ দিয়ে কমপক্ষে ১০ মাসের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা সম্ভব।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, প্রবাসী আয়ের কারণে রিজার্ভ বাড়ছে। করোনার মধ্যে রিজার্ভ বাড়ার খবর অর্থনীতির জন্য স্বস্তির।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৬৭১ কোটি ৩১ লাখ ডলার দেশে এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৪৯ শতাংশ বেশি। আর চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ২৭ দিনে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের মধ্যে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ অনেক বেড়েছে। একইভাবে রপ্তানি আয়ও ভালো আসছে। তবে আমদানি ব্যয় অনেক কমে গেছে। এ কারণে রিজার্ভে নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। তবে আমদানি বেড়ে গেলে রিজার্ভ আবার কমে আসবে।
করোনাভাইরাসের মধ্যে গত ১ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে। ৮ অক্টোবর তা আরও বেড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার হয়। আর বৃহস্পতিবার তা ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার ছাড়ায়।
ব্যাংকাররা বলছেন, সংকটে পড়লে এই রিজার্ভ অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে কাজে দেবে। আমদানি দায় মেটাতে সমস্যায় পড়তে হবে না।
প্রবাসী আয় বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া শুরু করে সরকার। এরপর থেকেই প্রবাসী আয়ে গতি এসেছে। তবে করোনার পরে তাতে নতুন মাত্রা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কাজ হারানোর আশঙ্কায় অনেকে সব বিক্রি করে টাকা পাঠাচ্ছেন। সুতরাং সামনের দিনগুলোয় প্রবাসী আয়ের এই গতি ধরে রাখা যাবে কি না, এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
মূলত, ২০১৪ সাল থেকেই দেশে রিজার্ভের পরিমাণ বেশি করে বাড়তে শুরু করে। ওই বছরের ১০ এপ্রিল রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তা ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ছাড়ায়। আর ২০১৬ সালের জুনে রিজার্ভ বেড়ে হয় ৩ হাজার কোটি ডলার।