ফিনসেন ফাইলস ফাঁস

বিশ্বজুড়ে ২ লাখ কোটি ডলারের অবৈধ লেনদেন

এবারেরটির নাম ‘ফিনসেন ফাইলস’
ছবি: ইসিআইজে সৌজন্যে

পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসের পর আবারও একটি বড় ধরনের আর্থিক দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়েছে। এবারেরটির নাম ‘ফিনসেন ফাইলস’। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের (ফিনসেন) কাছ পাওয়া এই তথ্য ফাঁস করেছে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)। ফিনসেন দাবি করেছে, আড়াই হাজারের বেশি সন্দেহজনক লেনদেনের গোপন নথি তাদের হাতে রয়েছে। ফাঁস হওয়া এই নথিতে দেখা গেছে, ২ লাখ কোটি ডলারেরও (২ ট্রিলিয়ন) বেশি অবৈধ অর্থ লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাংকগুলো।

ব্যাংকগুলোর গোপন চুক্তি, অর্থ পাচার এবং আর্থিক কেলেঙ্কারি ও অপরাধের তথ্যও উঠে এসেছে এই ফাঁস হওয়া নথিতে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ ২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজারের বেশি তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। ৮৮টি দেশের ১০৮টি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বাজফিড নিউজ এই ফিনসেন ফাইলটি শেয়ার করে।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী ফাঁস হওয়া তথ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—
১.জালিয়াতির বিষয় জানার পর বিশ্বজুড়ে কয়েক কোটি ডলার স্থানান্তর করার অনুমতি দেয় এইচএসবিসি ব্যাংক। ব্যাংকটি তাদের মার্কিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৮ কোটি ডলার হংকংয়ের এইচএসবিসি ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। চক্রটি ‘পঞ্জি স্কিম’ নামে এক ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত।

২. মালিকানা জানা না থাকা সত্ত্বেও জে পি মরগ্যান ব্যাংক একটি কোম্পানিকে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ লন্ডনের শাখার মাধ্যমে স্থানান্তরের অনুমতি দিয়েছে। পরে ব্যাংকটি জানতে পারে কোম্পানির মালিক খুব সম্ভবত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইএর মোস্ট ওয়ান্টেড দশের তালিকায় থাকা একজন।

৩. ফাঁস হওয়া নথিতে বলা হয়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশের আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে লন্ডনের বার্কলেস ব্যাংককে ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে কিছু অর্থ শিল্পকর্ম কিনতে ব্যবহার হয়েছে।

৪. ফিনসেনের গোয়েন্দা বিভাগ যুক্তরাজ্যকে সাইপ্রাসের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ বিচারব্যবস্থা বলে আখ্যায়িত করেছে। কারণ সন্দেহজনক ক্রিয়াকলাপের প্রতিবেদনে (এসএআরএস) যুক্তরাজ্যের নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা খুব বেশি।

৫. সংযুক্ত আরব আমিরাতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্থানীয় ফার্মগুলোকে সতর্ক করতে ব্যর্থ হয়। ফার্মগুলো ইরানকে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে আর্থিক লেনদেন চালাতে সহযোগিতা করছিল।

৬. জার্মানির ডয়েচে ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাচারকারীদের অবৈধ অর্থ, সংঘবদ্ধ অপরাধ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং মাদক পাচারের জন্য লেনদেন হয়েছিল।

৭. জর্ডানের ব্যাংকে গ্রাহকদের হিসাবে অর্থ প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নে ব্যবহৃত হওয়ার পর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড তা আরব ব্যাংকে সরিয়ে নেয়।