মুজিব বর্ষ

গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য আসছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা

  • মুজিব বর্ষ শেষ হবে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ। এর মধ্যেই নতুন বিমা পলিসি চালু করতে চায় আইডিআরএ। প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে।

  • বিমা প্রিমিয়াম মাসে ২৫ টাকা। পলিসির আকার ১ লাখ টাকা।

  • ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা পলিসির আওতায় আসবে। মা-বাবা মারা গেলে শিক্ষার্থীরা মাসে ১ হাজার টাকা করে পাবে।

টাকার অভাবে অল্প বয়সী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য সরকার একটি বিমা পলিসি চালু করতে চাইছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা’। এই বিমা পলিসির প্রিমিয়াম হবে মাসে ২৫ টাকা, বছরে ৩০০ টাকা। আর বিমার অঙ্ক ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক তিন বছর আগে এ বিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে জমা দেয়। এরপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তা নিয়ে কাজ করতে দেয় বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ)। পলিসিটি যাতে মুজিব বর্ষ থাকতে থাকতেই চালু করা যায়, সে ব্যাপারে সম্প্রতি নতুন করে উদ্যোগী হয়েছে আইডিআরএ। মুজিব বর্ষ শেষ হবে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ।

আইডিআরএর চেয়ারম্যান এ কে এম মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোট শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থেই চালু করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা। মুজিব বর্ষেই এটা হবে বলে আমরা আশা করছি।’

বলা হয়েছে, বিমাবৃত অর্থাৎ মা-বাবা অথবা অভিভাবক মারা গেলে বিমা পলিসি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে মাসে ১ হাজার টাকা করে। শিক্ষার্থীর বাবা অথবা মা বিমাগ্রহীতা হবেন।

এ বিষয়ে আইডিআরএর তৈরি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত বিমা পলিসির আওতায় আসবে। শিক্ষার্থীদের পক্ষে পলিসি করবেন তাদের বাবা, মা অথবা অভিভাবক। তাঁদের বয়স হতে হবে ২৫ থেকে ৬৫ বছর। প্রিমিয়ামের টাকা নেওয়া হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। পলিসি হবে ১ থেকে ১২ বছর মেয়াদি। আর শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ ও বিমাগ্রহীতার বয়স ৬৫ বছর হয়ে গেলেই পলিসি মেয়াদোত্তীর্ণ বলে বিবেচিত হবে।

বলা হয়েছে, বিমাবৃত অর্থাৎ মা-বাবা অথবা অভিভাবক মারা গেলে বিমা পলিসি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে মাসে ১ হাজার টাকা করে। শিক্ষার্থীর বাবা অথবা মা বিমাগ্রহীতা হবেন। মা-বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁদের অনুমোদন সাপেক্ষে অন্য কেউ অভিভাবক হতে পারবেন। আবার মা-বাবার অবর্তমানে শিক্ষার্থীর ভরণপোষণকারীও হতে পারবেন বিমাগ্রহীতা। বিমাগ্রহীতা স্থায়ীভাবে সম্পূর্ণ বা আংশিক অক্ষম হলে এককালীন ১ লাখ টাকা দেওয়া হবে তাকে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, বিমাগ্রহীতার বয়স, শিক্ষার্থীর বয়স, শ্রেণি ও অন্যান্য তথ্য ব্যাংক সংরক্ষণ করবে। মেয়াদ পূর্ণ হলে ব্যাংক বিমা দাবি পরিশোধের জন্য বিমা

বাংলাদেশ ব্যাংক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইডিআরএসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে গত সপ্তাহে এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি বৈঠক করেছে। এতে কিছু পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক শিক্ষাবিমার বিষয়টিকে স্কুল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে চায়।

কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাবে। সব প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধ করতে হবে। আইডিআরএ ১০টি বিমা কোম্পানির মাধ্যমে এই বিমা চালুর পরিকল্পনা করছে, যা পরে বাড়তে পারে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইডিআরএসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে গত সপ্তাহে এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি বৈঠক করেছে। এতে কিছু পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক শিক্ষাবিমার বিষয়টিকে স্কুল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে চায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন পর্যন্ত ২৪ লাখ ৩১ হাজার ৬০২টি স্কুল ব্যাংকিং হিসাব রয়েছে, আর জমা আছে ১ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা।

উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই পলিসি চালু হবে মুজিব বর্ষে বিমা খাতের উপহার হিসেবে। এর ফলে অন্তত গরিবের সন্তানের শিক্ষাজীবন নষ্ট হবে না।