পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু

নির্মাণকাজের কেনাকাটায় ব্যয় বাড়ছে ১,১১৮ কোটি টাকা

যান চলাচল শুরুর প্রায় এক বছর পর পদ্মা বহুমুখী সেতুর ব্যয় আরেক দফা বাড়ল। এ দফায় বাড়ানো হলো ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সেতু বিভাগের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প। এটি এখন ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প’ নামে পরিচিত। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মাহমুদুল হোসাইন খান জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণকাজের ভ্যারিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে।

১৯৯৯ সালে প্রাক্‌-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সূত্রপাত। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের শেষের দিকে। শুরুর পর এক দিনের জন্যও কাজ থেমে থাকেনি।

২০০৭ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। পরে ২০০৯ সালে প্রথম সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে দ্বিতীয় সংশোধনী আসে। সর্বশেষ বিশেষ সংশোধনী নামে আরেক দফা ব্যয় বাড়ালে তা ৩০ হাজার ১৯৩ কোটিতে উন্নীত হয়।

আড়াই হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনী গত এপ্রিলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয়। সংশোধিত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যখন ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি করা হয়, তখন প্রতি ডলারের দাম ধরা ছিল ৭৮ টাকা ৩০ পয়সা। এরপর ডলারের দাম ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। ১০৭ টাকায় পর্যন্ত ডলার কিনতে হয়েছে। এ জন্য প্রকল্পের খরচ বেড়েছে।

পদ্মা সেতু দ্বিতল, ইস্পাত ও কংক্রিটের যৌথ মিশ্রণে নির্মিত। এর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের পথ। নিচে বা ইস্পাতের কাঠামোর ভেতর দিয়ে রয়েছে রেলপথ। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (নদীর অংশ) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। দুই পারে ভায়াডাক্ট বা সেতুর বাইরের উড়ালপথ ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার।

সেতুর সড়কপথটি চার লেনের। চওড়া ২২ মিটার। মাঝখানে আছে সড়ক বিভাজক। দুই দিক থেকে দুটি করে চারটি যানবাহন একসঙ্গে যাওয়া-আসা করার পরও জায়গা থাকবে। নদীর পানি থেকে সেতুর উচ্চতা ১৮ দশমিক ৩০ মিটার বা ৬০ ফুট। ফলে সেতুর নিচ দিয়ে অনায়াসে বড় নৌযান চলাচল করতে পারবে।

পদ্মা সেতুতে রেলপথ রয়েছে। পদ্মার দুই পাড়ে নদী শাসন করা হয়েছে প্রায় ১৪ কিলোমিটার। চওড়া সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে ১২ কিলোমিটার।