চট্টগ্রাম বন্দর
চট্টগ্রাম বন্দর

গতি ফিরছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে

আমদানি–রপ্তানির নতুন চালান শুল্কায়ন ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ইন্টারনেটের ধীরগতি থাকলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পণ্যের চালান শুল্কায়নে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ায় আমদানি–রপ্তানিতে গতি ফিরে এসেছে। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে শুল্কায়নের জন্য প্রায় ৭ হাজার ৮১৯টি আমদানি–রপ্তানি চালানের নথি অনলাইনে দাখিল করেছেন ব্যবহারকারীরা। আবার বন্দর থেকে পণ্য খালাসও পুরোদমে শুরু হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। এতে অনলাইনে শুল্কায়নের জন্য আমদানি–রপ্তানি চালানের নথি কাস্টমসের অ্যাসাইকুডা সার্ভারে দাখিল করা যাচ্ছিল না। এ পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার এনবিআর থেকে অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সক্রিয় করা হয়। এতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও ডিপোগুলোয় অ্যাসাইকুডা সার্ভারে পণ্য চালানের নথি জমা দেওয়া ও শুল্কায়ন শুরু হয়। তবে ব্যবহারকারীরা জানতে না পারায় প্রথম দিন খুব বেশি চালানের নথিপত্র জমা পড়েনি।

ইন্টারনেটে ধীরগতি থাকলেও আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রমে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য কাস্টম হাউসে ব্যবহারকারীদের জন্য কম্পিউটারের সংখ্যা ৫টি থেকে বাড়িয়ে ১২টিতে উন্নীত করা হয়েছে।
তারেক হাসান, যুগ্ম কমিশনার, চট্টগ্রাম কাস্টমস

গত মঙ্গলবার রাত থেকে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে বাইরে থেকে অনলাইনে খুব বেশি চালানের নথিপত্র জমা দেওয়া যায়নি। তবে সশরীর কাস্টম হাউসে গিয়ে অনলাইনে ব্যবহারকারীরা আমদানি–রপ্তানি চালানের নথি জমা দিয়েছেন। শুল্কায়নও হয়েছে। ব্যবহারকারীরা যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারেন, সে জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের সার্ভারে আমদানি–রপ্তানি চালানের নথি জমা দেওয়ার সুবিধা বাড়িয়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, গতকার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত ৬ হাজার ৭১৮টি রপ্তানি চালানের নথি শুল্কায়নের জন্য সার্ভারে জমা পড়েছে। আমদানি পণ্য শুল্কায়ন করে খালাস নেওয়ার জন্য জমা পড়েছে ১ হাজার ১০১টি চালানের নথি। স্বাভাবিক সময়ে দিনে গড়ে ৬ হাজার রপ্তানি চালান ও ১ হাজার ২০০টি আমদানি চালান শুল্কায়ন হয়। সেই হিসাবে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করেছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার তারেক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ইন্টারনেটে ধীরগতি থাকলেও আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রমে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য কাস্টম হাউসে ব্যবহারকারীদের জন্য কম্পিউটারের সংখ্যা ৫টি থেকে বাড়িয়ে ১২টিতে উন্নীত করা হয়েছে। এর সুফলও মিলেছে। পণ্য আমদানি–রপ্তানির নথি জমা ও শুল্কায়ন কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে আসছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে পণ্যের শুল্কায়নে গতি ফিরে আসায় বন্দরেরও কর্মতৎপরতা বেড়েছে। শুল্কায়নের পর শুল্ককর পরিশোধ হলে আমদানি পণ্য ছাড় করা যায়। আবার শুল্কায়নের পর পণ্য রপ্তানি করা যায়। গতকাল ব্যাংক খোলা থাকায় শুল্ক–করও পরিশোধ করতে পেরেছেন ব্যবসায়ীরা। তাতে পণ্য খালাসও বেড়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘পণ্য খালাস কম থাকায় এত দিন বন্দরে কনটেইনারের সংখ্যা বাড়ছিল। তবে বুধবার বন্দর থেকে তিন হাজার কনটেইনারের বেশি চালান খালাসের প্রক্রিয়া চলছে। এতে বন্দরে কনটেইনারের চাপ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’