ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ইলিশ বিক্রির নিষেধাজ্ঞার প্রভাব

ইলিশের চাপ অন্য মাছে, দাম বাড়তি

শুক্রবার থেকে ইলিশ মাছ ধরা ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। এ কারণে বাজারে অন্যান্য মাছের চাহিদা বেড়েছে।

২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে ইলিশ ধরা ও বিক্রিতে। গত শুক্রবার এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২২-এর আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এতে বাজার থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে ইলিশ মাছ। ইলিশ বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাজারে বেড়েছে অন্য মাছের চাহিদা। তাতে বেড়ে গেছে দামও। মাছভেদে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা।

রাজধানীর নিউমার্কেট ও কাঁঠালবাগান কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশ মাছ বাজারে না থাকায় ক্রেতারা অন্য মাছ কিনছেন। বিশেষ করে রুই, কাতলার মতো কার্পজাতীয় মাছের চাহিদা বেশি। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এসব মাছের দামও বেড়েছে। এ দুই বাজারে গতকাল শনিবার ছোট ও মাঝারি আকারের রুই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ৩৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর বড় আকারের রুইয়ের দাম ছিল প্রতি কেজি ৪০০ টাকার মধ্যে। আর জীবন্ত রুই মাছ বিক্রি হয়েছে ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজিতে। বিক্রেতা ও ক্রেতারা বলছেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে রুই মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া মাঝারি আকারের কাতলা মাছ বাজারে বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে।

বাজারে এখন সবচেয়ে কম দামি মাছের মধ্যে রয়েছে পাঙাশ, তেলাপিয়া। এসব মাছের দামও কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। অবশ্য মৌসুমি ইলিশ ব্যবসায়ীরা বাজারে না থাকায় স্থায়ী মাছ বিক্রেতারা দেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রি করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের মাছ ব্যবসায়ী ফয়সল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইলিশ থাকলে স্বাভাবিকভাবেই অন্য মাছের বিক্রি কমে যায়। এখন ইলিশ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে অন্যান্য মাছ বেশি বিক্রি হচ্ছে। এতে অনেক পদের মাছ বিক্রি করতে পারছি। ব্যবসা ভালো হচ্ছে। গত সপ্তাহেও প্রতিদিন দেশি মাছ দুই মণের বেশি বিক্রি করতে পারিনি। এখন তিন থেকে চার মণ মাছ বিক্রি করতে পারব।’

সস্তা মাছের মধ্যে মাঝারি আকারের পাঙাশ মাছ গতকাল নিউমার্কেট ও কাঁঠালবাগান বাজারে ২০০ টাকার বেশি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ছোট পাঙাশ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়। চাষের মাঝারি ও বড় আকারের তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। এই দুই পদের মাছ গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের। চাষের কই মাছ বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে।

এ ছাড়া রাজধানীর বাজারে গতকাল মাঝারি আকারের শিং ও মাগুর মাছ বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজিতে। মানভেদে এই দুই প্রকারের মাছের দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। আকারভেদে পাবদা মাছ প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ১ হাজার, বাগদা চিংড়ি ৬০০ থেকে ৭০০, গলদা চিংড়ি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কাঁঠালবাগান বাজার থেকে তিন কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ কেনেন রোখসানা আক্তার। পান্থপথের এই বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাষের রুই-কাতলা ছাড়া বাজারে কিছু পাওয়া যায় না। এ জন্য কেনা হয় কম। কিনলে দেখেশুনে নিতে হয়। তিন কেজির কম ওজনের কাতলা মাছটির দাম প্রথমে ১ হাজার ২০০ টাকা চেয়েছিলেন বিক্রেতা। পরে দরদাম করে ১ হাজার টাকায় নিলাম। কাটাতে খরচ আরও ৫০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতি কেজি ৩৫০ টাকার মতো পড়ল।’