আহসান এইচ মনসুর
আহসান এইচ মনসুর

আইএমএফের ঋণ

অভিমত: সংস্কার না হলে পরের কিস্তিতে পার পাওয়া কঠিন হবে

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ আপাতত স্বস্তি দেবে। অর্থনীতিকে সঠিক পথে রাখতে সহায়তা করবে। আইএমএফের কাছ থেকে প্রায় ৭০ কোটি ডলারের মতো এসেছে। আইএমএফের এই কিস্তি অনুমোদন করার ফলে বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৪০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তাও দ্রুত ছাড় হবে। এর ফলে শিগগিরই ১৫০ কোটি ডলার আসছে।

এসব অর্থ আসার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে। হয়তো জাতীয় নির্বাচনের আগে রিজার্ভ আর কমবে না। ১৮-১৯ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে থাকবে। রিজার্ভ না কমা নির্বাচনের আগে জরুরি ছিল।

আইএমএফের শর্ত অনুসারে এখনো অনেক কাজ অসমাপ্ত আছে। এটি আইএমএফ নিজেও বলেছে। তবে নির্বাচনের পরে এসব অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে হবে। এ জন্য নতুন করিতকর্মা অর্থমন্ত্রী লাগবে। পাশাপাশি একটি শক্তিশালী অর্থনীতিবিষয়ক দলেরও দরকার হবে। যেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পাশাপাশি বেসরকারি খাত থেকে বিশেষজ্ঞ নিতে হবে। তাঁরা শুধু আইএমএফের শর্ত পূরণে সংস্কার কার্যক্রম নয়; অর্থনীতির অন্য বিষয়গুলো নিয়েও কাজ করবেন। একটি কৌশল ঠিক করে দেবেন।

বিদেশি ঋণের ক্ষেত্রে অনাদায়ী ও অনিষ্পন্ন দায়ের নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রায় ৪৫০ কোটি ডলার এমন অনিষ্পন্ন দায় আছে। বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর নিজেদের অর্থ পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে। আবার বিদ্যুৎ খাতেও বিপুল অর্থ পরিশোধ বাকি আছে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি করতে হবে।

এ ছাড়া মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ, সুশাসন, তদারকির সমস্যা আছে। রাজস্ব খাতেও সংস্কার জরুরি।

তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশ কিছু বড় সংস্কারের শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। এই শর্ত পূরণ করতে না পারলে ঋণের পরের কিস্তির জন্য পর্যালোচনায় পার পাওয়া কঠিন হবে। সামনে বাংলাদেশের জন্য অনেক কাজ আছে। এ জন্য বড় ধরনের সংস্কার দরকার হবে, তার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে কিছুই হবে না।

আহসান এইচ মনসুর
নির্বাহী পরিচালক
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)