১০০ দিনের মধ্যে বিনিয়োগ পরিবেশে পরিবর্তন হবে, নতুন নতুন কর্মসংস্থান হবে—এমন আশা করা বাস্তবসম্মত নয়। আগের সরকারের দোসরদের মধ্যে অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী আছেন। তাঁদের অনেকেই পালিয়ে গেছেন কিংবা জেলে গেছেন। এসব প্রতিষ্ঠান এখন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। খেলোয়াড় পরিবর্তন করলেই যে বিনিয়োগ বাড়বে, তা নয়।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে একধরনের অনিশ্চয়তা চলছে। আগামী এক-দেড় বছরে রাজনীতি কোন দিকে যায়, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা। আবার কারা ক্ষমতায় যেতে পারে, তা–ও তাঁরা বিবেচনায় রাখছেন। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হলে ব্যবসায়ীদের আস্থায় আনতে হবে।
১. বিদ্যুৎ ও জ্বালানির নির্ভরযোগ্য ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। জ্বালানি খাতের দুর্নীতির কারণে মূল্য বৃদ্ধি পায়, যা ভোক্তা বা ব্যবসায়ীর ঘাড়ে পড়ে। এ খাতে দুর্নীতি কমাতে হবে।
২. আর্থিক খাত এখন পচনশীল খাতে পরিণত হয়েছে। এ খাতে বেশ কিছু দুর্দশাগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান আছে। আর্থিক খাতের পচনশীলতা কমাতে হবে। এ খাতকে সবল করতে হবে। এ খাত সংস্কারের কাজ চলছে। যত দ্রুত সঠিকভাবে সংস্কার হবে, ততই এ খাতে আস্থা ফিরে আসবে।
৩. করনীতির সংস্কার করতে হবে। কর প্রদানের প্রক্রিয়া সরল করতে হবে। এ ছাড়া কর প্রয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া আমদানি পর্যায়ে শুল্কায়নের সময় নানা ধরনের কাগজপত্র দিতে হয়। এর ফলে কর কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব খাটানোর সুযোগ তৈরি হয়। এসব কাজে খরচ ও সময় সাশ্রয় করতে হবে।
৪. সরকারি বিনিয়োগের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। সরকারি বিনিয়োগ এমন খাতে করতে হবে, যাতে বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হয়।
৫. ব্যবসা শুরু করার নিয়মকানুন সহজ করতে হবে। ব্যবসা শুরু করতে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে নিবন্ধন নিতে হয়। ফলে উদ্যোক্তাদের পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়।
জাহিদ হোসেন, সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়