জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পণ্য আমদানি–রপ্তানি ব্যাহত হতে শুরু করে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে না আসতেই আবার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। আসলে এ রকম পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।
ভারী শিল্পের মধ্যে বৃহৎ খাত লৌহ ও ইস্পাতশিল্প। কাঁচামাল আমদানি করে আমাদের বন্দর থেকে কারখানায় নিতে হয়। এরপর পণ্য উৎপাদন করে সড়কপথে তা সারা দেশে সরবরাহ করতে হয়। এ খাতের কিছু পণ্য রপ্তানিও হয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এসব কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া কঠিন।
এমনিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে। আগের তুলনায় চাহিদা কমেছে ইস্পাত খাতেও। তারপরও আমরা প্রতিনিয়ত উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছি। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চাহিদা আরও কমেছে। কারণ, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড না হলে, বিশেষ করে নির্মাণ খাতের কার্যক্রমে যে স্থবিরতা, তার প্রভাবে এই চাহিদা কমছে। চাহিদা কম থাকলে পণ্য উৎপাদন করেও তার ফল পাওয়া যায় না।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রোববার মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট যাতে বন্ধ করা না হয়, সে অনুরোধ করছি। কারণ, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করা আত্মঘাতী হবে। জুলাই মাসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করায় আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছিল। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হলে বৈদেশিক বাণিজ্য সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। রোববার সন্ধ্যা থেকে কারফিউ দেওয়া হয়েছে। কারফিউর মধ্যে যাতে সীমিতভাবে হলেও উৎপাদন ও সরবরাহ কার্যক্রম সামাল দেওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাই। বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখতে হবে।
এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা অব্যাহত থাকলে নতুন বিনিয়োগ হবে না। বরং যেসব উৎপাদনমুখী কারখানা আছে, সেগুলো চালিয়ে নেওয়া বা সচল রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার রপ্তানি খাত বারবার ব্যাহত হলে বিদেশিদের আস্থা নষ্ট হবে। এতে রপ্তানি আদেশ অন্য দেশে চলে যেতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে একটাই আহ্বান জানাই, বিদ্যমান সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হোক। তা না হলে অর্থনীতি ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যাবে।
আমীর আলীহুসেইন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএসআরএম গ্রুপ