প্রতিবারেই বাজেট নিয়ে ব্যবসায়ীদের অনেক প্রত্যাশা থাকে। আবার সরকারকেও বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বাজেট প্রণয়ন করতে হয়। এখন অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো—উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে বেরিয়ে আসা, কর্মসংস্থান বাড়ানো ও ব্যবসার খরচ কমানো।
কিন্তু ঘোষিত বাজেটে এসব বিষয়ে তেমন কোনো দিকনির্দেশনা দেখা গেল না। উল্টো কালোটাকা মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলো। অথচ আমরা ব্যবসা করে যে মুনাফা পাই, তার বিপরীতে এর চেয়ে বেশি টাকা কর দিতে হয়। কালোটাকার মালিকদের কোনো যুক্তিতেই সুযোগ দেওয়া ঠিক নয়।
এখন করহার কমিয়ে করের আওতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণে ব্যবসায়ীদের যেভাবে হয়রানি করে কর আদায় করা হচ্ছে, এটা বন্ধ করতে হবে। একজনকে ধরার জন্য ৯৯ জন ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা যাবে না। আমরা যে অগ্রিম কর দিয়ে আসছি, সেটা সময়মতো ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না। আবার সমন্বয়ও করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে ভালো ব্যবসায়ীরা এই সমস্যায় সবচেয়ে বেশি পড়ছেন। তবে বাজেটে লজিস্টিক খাত নিয়ে কিছু ঘোষণা আছে, যেটা ভালো উদ্যোগ।
আমি মনে করি, কিছু পন্থা নিলে সহজেই কর আদায় বাড়ানো যায়। এখন রাজধানীসহ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে যে মৌজা দরে জমি কেনাবেচা হচ্ছে, তার চেয়ে প্রকৃত দাম কিন্তু কয়েক গুণ বেশি। কিন্তু মৌজা দরেই কর দেওয়া হচ্ছে।
প্রকৃত দামে মৌজা কর দেওয়ার ব্যবস্থা করা গেলে কর আদায় অনেক বেড়ে যায়। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি চাপে আছে। বাজেটে তাদের ওপর কর কমিয়ে দেওয়া প্রয়োজন ছিল। এতে তাদের ওপর চাপ কম হতো।
বাজেটে ব্যবসা সহজীকরণ ও ব্যবসার খরচ কমানোর কোনো পদক্ষেপ নেই। আমলাতান্ত্রিক কারণে এখন ব্যবসা করা সহজ নয়। বিনিয়োগ উপযোগী কোনো নির্দেশনা বাজেটে নেই। এ কারণে দেশীয় বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগও আসছে না।
ডলার-সংকট কাটাতে চাইলে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হবে। আবার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, চাহিদামতো সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। আগের বাজেটের ব্যর্থতা পর্যালোচনা করে নতুন বাজেট প্রণয়ন করা উচিত ছিল।
আবুল কাসেম খান, সাবেক সভাপতি, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)