দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো অবস্থা আমার নেই। আমরা ভাবিনি, বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এখন সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য। একজন কর্মী যখন বাড়ি থেকে কারখানায় আসেন, তখন তাঁর দায়িত্ব কোম্পানির। ফলে তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে আমরা কারখানা খোলা রাখতে পারি না। এ ছাড়া এখন যে পরিস্থিতি, তাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষেও হয়তো শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
এর আগে সাধারণ ছুটি ও কারফিউর সময় উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তখনো আমাদের রপ্তানিতে প্রভাব পড়েছে; এখনো পড়বে। কথা হচ্ছে, এই পরিস্থিতি চলমান থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে আমরা কী বার্তা দেব। সেই সঙ্গে দেশে এখন যেসব বিদেশি কাজ করেন, তাঁদের উদ্দেশেই বা কী বার্তা দেওয়া হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে আমরা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যাব।
এই অনিশ্চয়তার মুখে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ এবং সেই সঙ্গে আমাদের মতো কোম্পানিগুলো। উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হয়ে দেশে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। সবকিছু বন্ধ থাকলে মানুষের কাজকর্ম কমে যাবে। আয় কমে যাবে; কষ্ট বাড়বে মানুষের।
মোদ্দাকথা হলো, এখন ব্যবসায়িক লাভ-লোকসানের চেয়ে দেশের স্থিতিশীলতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই অনিশ্চয়তার শেষ কোথায়, আমরা তা জানি না। সরকারকেই এখন দায়িত্ব নিতে হবে। সংঘাত এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
আহসান খান চৌধুরী, চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।