বিশ্ব এমএসএমই দিবস আজ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে ঋণ প্রদানে। তারপরও অর্থায়নই প্রধান সমস্যা খাতটির। এমএসএমই দিবস সামনে রেখে এই আয়োজন
দেশের জিডিপিতে সিএমএসএমই খাতের অবদান ২৫ শতাংশ। কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয়সহ নানা খাতে সিএমএসএমই কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তবে এই খাতের ভূমিকা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে যাচ্ছে। এই খাতের জন্য জামানত ছাড়া ঋণ, ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমসহ নানা সুবিধা চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া অর্থনীতিকে বেগবান করতে পুনঃ অর্থায়ন প্রকল্প ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ে ঋণপ্রাপ্তি আরও সহজ করা ও ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় ঋণ বিতরণের প্রক্রিয়া নিয়ে সবাই কাজ করছে।
করোনার পরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এই খাতকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি হয়নি। তবে সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই খাতকে সুদৃঢ় করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। ফলে এই খাত এখন ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিশ্চিত করতে যে ইকো সিস্টেম থাকার কথা, সে ক্ষেত্রে অপ্রতুলতা রয়েছে। যে কারণে অনেক সময় উদ্যোক্তারা ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সে জন্য সেমিনার-কর্মশালার আয়োজন করতে হবে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা যেমন অধিকতর কার্যকর নীতি গ্রহণ, দক্ষতা অর্জন ও নেটওয়ার্ক বৃদ্ধির সুযোগ পাবেন। সাল্পাই চেইন বা সরবরাহ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেও মুনাফা বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।
সুদের হার বাজারভিত্তিক হওয়ায় তা উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার শক্তি বাড়াবে। যদিও সাময়িকভাবে সুদের হার কিছুটা হলেও তাঁদের সমস্যায় ফেলবে। তারপরও এই খাতে মুনাফার হার তুলনামূলক বেশি হওয়ায় পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হবে না। তা ছাড়া স্বল্প সুদের অনেক পুনঃ অর্থায়ন প্রকল্প এখন সচল রয়েছে।
দেশের ব্যাংকগুলো উদ্যোক্তা তৈরি ও এসএমই খাতের বিকাশে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তারা কাজটি করতে পারে অর্থের জোগান বাড়িয়ে। উদ্যোক্তারাও এখন আগের চেয়ে অনেক সজাগ।
বর্তমানে দেশের শিল্প ও সেবা খাত যথেষ্ট ভালো করছে। খাত দুটি রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণেও বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
সিএমএসএমই খাতকে এখন করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধকল পোহাতে হচ্ছে। এ কারণে প্রত্যাশিত মুনাফা বা ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অনেকেরই ঋণ পরিশোধে সমস্যা হচ্ছে। তবে অবস্থার উন্নতি ঘটছে। ব্যাংকগুলো তদারকি বাড়ানোসহ ঋণ পরিশোধপ্রক্রিয়া শিথিল করে এই সমস্যাকে সামাল দিচ্ছে।
হেড অব এসএমই ব্যাংকিং, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক।
সঞ্জীব কুমার দে, হেড অব এসএমই ব্যাংকিং, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক