> বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন
* এ অর্থবছরে ৭ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে পারে এমন নয়টি দেশের মধ্যে একটি বাংলাদেশ
* অন্য ৮ দেশ হলো ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, জিবুতি, আইভরি কোস্ট, ইথিওপিয়া, ঘানা ও রুয়ান্ডা
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সারা বিশ্বে মাত্র নয়টি দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এসব দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার চারটি ও আফ্রিকার পাঁচটি দেশ আছে। এই নয়টি দেশের একটি বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হতে পারে। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য আটটি দেশ হলো ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, জিবুতি, আইভরি কোস্ট, ইথিওপিয়া, ঘানা ও রুয়ান্ডা। তবে এই দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতকেই উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৮ জানুয়ারি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস-২০১৯ প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে এমন নয়টি দেশ পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এবার ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও পরের তিন অর্থবছরে তা কমে যেতে পারে। ২০১৯-২০,২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, মূলত ব্যক্তি খাতের ভোগ চাহিদা ও সরকারি ব্যয় বৃদ্ধিই চলতি অর্থবছরে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে।
চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘোষণার সময় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস ধরেই সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের একাধিকবার বলেছেন, অর্থনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক থাকলে এবার ৮ দশমিক ২৫ থেকে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে। সেখানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি নিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, দক্ষিণ এশিয়া হলো বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত অগ্রসরমাণ অর্থনৈতিক অঞ্চল। মূলত ব্যক্তি খাতের ভোগ চাহিদা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে এই অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে অগ্রসর হওয়ার অন্যতম কারণ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সম্ভাবনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কারণও বাধা হতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০১৯ সালে এই অঞ্চলের কয়েকটি দেশ জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে, যা একধরনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে। যার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে অর্থনীতিতে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চলতি অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে ভুটান। দেশটি চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। এরপরই ভারতে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। তৃতীয় স্থানে থাকবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া পাকিস্তান ও নেপাল যথাক্রমে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও ৫ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। অর্থবছরের হিসাবে এই পাঁচটি দেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আর পঞ্জিকাবর্ষের হিসাবে বাকি তিনটি দেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। দেশগুলোর মধ্যে ২০১৮ সালে মালদ্বীপ ৮ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ৩ দশমিক ৯ শতাংশ ও আফগানিস্তান ২ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।
উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়া থেকে তিনটি দেশকে বিবেচনা করে বিশ্বব্যাংক। দেশগুলো হলো ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। চলতি অর্থবছরে ভারত ও বাংলাদেশই ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। আগামী তিন অর্থবছরে ভারত ও শ্রীলঙ্কা ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেরই জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। তবে সার্বিকভাবে আগামী তিন অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
আরও পড়ুন: ২৫ বড় অর্থনীতির তালিকায় ঢুকবে বাংলাদেশ