সারা বিশ্বে এখন ৬ কোটি ৮০ লাখ তরুণ-তরুণী বেকার, যাঁদের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। বর্তমান বিশ্বে যত তরুণ জনগোষ্ঠী আছে, তাদের এক-পঞ্চমাংশ কাজের মধ্যে নেই, আবার পড়াশোনা কিংবা প্রশিক্ষণেও তারা নেই। ফলে বিশ্বে তরুণ জনসংখ্যা বাড়লেও শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ কমেছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘গ্লোবাল এমপ্লয়মেন্ট ট্রেন্ডস ফর ইয়ুথ ২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। ৯ মার্চ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে আইএলও।
সংস্থাটি বলছে, ১৯৯৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বে তরুণ জনগোষ্ঠী ১০০ কোটি থেকে ১৩০ কোটিতে পৌঁছেছে। এই সময়ের মধ্যে শ্রমশক্তিতে তরুণদের যুক্ত হওয়া কমেছে। ১৯৯৯ সালে তরুণ শ্রমশক্তি ছিল ৫৬ কোটি ৮০ লাখ। গত বছরে এই সংখ্যা কমে ৪৯ কোটি ৭০ লাখে নেমে গেছে। আইএলও বলছে, শ্রমশক্তিতে ধারাবাহিকভাবে তরুণদের অংশগ্রহণ কমেছে। এর পেছনে কারণ শুধু নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে তাঁরা যে পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণে যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন, তা নয়। তরুণেরা শ্রমবাজারে নেই, আবার পড়াশোনায়ও নেই।
আইএলও পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল ধরে শ্রমে যুক্ত তরুণ-তরুণীদের নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তবে তাতে কোন দেশের কত তরুণ-তরুণী বেকার, সেই সংখ্যাসহ সেখানকার তরুণ শ্রমশক্তির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়নি।
আইএলও বলছে, বর্তমানে সারা বিশ্বের ১২৭ কোটি ৩০ লাখ তরুণ-তরুণী আছেন। তাঁদের মধ্যে ৪২ কোটি ৯০ লাখ কোনো না কোনোভাবে কাজের মধ্যে আছেন। সাড়ে ৭৩ কোটি তরুণ শ্রমশক্তির বাইরে আছেন। সার্বিকভাবে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেকার। সবচেয়ে কম বেকারত্ব উত্তর আমেরিকার তরুণেরা। ওই অঞ্চলের ৯ শতাংশ তরুণ বেকার। অন্যদিকে সাব-সাহারা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ তরুণ বেকার।
আইএলও সম্ভাবনার কথাও বলেছে। সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সারা বিশ্বে চার কোটির বেশি তরুণ-তরুণী আছেন, যাঁদের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কাজে লাগানো যাচ্ছে না। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও মনমতো কাজ পাচ্ছেন না তাঁরা।
এবার দেখা যাক তরুণদের কর্মসংস্থান কোথায় বেশি হয়। আইএলও বলছে, মাত্র ২৩ শতাংশ তরুণ আনুষ্ঠানিক খাতে কাজ পান। বাকিরা অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। তরুণদের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশ নিজের প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। মজুরি বা বেতনভিত্তিক কাজ করেন ৫৪ শতাংশ, ২৬ শতাংশ পরিবারের কাজে সহায়তা করেন। আর বাকি ২০ শতাংশ আত্মনিয়োজিত কর্মে আছেন।