বিদেশে পাচারের সুযোগ বন্ধ, তাই এত টাকা সাদা

আহসান এইচ মনসুর, নির্বাহী পরিচালক, পিআরআই
আহসান এইচ মনসুর, নির্বাহী পরিচালক, পিআরআই

করোনার কারণে বিদেশ ভ্রমণে নানা নিষেধাজ্ঞা আছে। বড় বড় লোকেরা বিদেশে আসা-যাওয়া করতে পারছেন না। বিদেশে ‘বেড়াতে’ যেতে পারছেন না কালোটাকার মালিকেরা। তাই এখন বিদেশে পাচার করা যাচ্ছে না। কারণ, টাকার সঙ্গে কাউকে যেতে হয়, করোনার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁদের অনেকেই সাহস করে এ বছর কালোটাকা সাদা করে ফেলছেন। এমন ঢালাও সুযোগ তো সচরাচর দেখা যায় না। সেই সুযোগই নিয়েছেন তাঁরা।

সাদা করা কালোটাকার বেশির ভাগই অবৈধভাবে উপার্জিত। তা না হলে নগদ টাকা বেশি সাদা হবে কেন? পরিচিত মুখের চেয়ে অপরিচিত মুখের করদাতারাই বেশি কালোটাকা সাদা করছেন। পরিচিত মুখেরা (ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, আমলা—যাঁদের সবাই চেনে) এই সুযোগ নেবেন না, কারণ, সামনে তাঁদের জন্য আরও সুযোগ আসবে। যেমন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা দুর্নীতি করে বিপুল টাকা কামিয়েছেন। তিনি সমাজের পরিচিত মুখ। এই মুহূর্তে তিনি এই সুযোগ নেবেন না। এমন সুযোগ যেহেতু বারবার আসে, তাই তিনি অবসর গ্রহণের পর এই টাকা সাদা করতে চাইবেন।

আমি মনে করি, কালোটাকা সাদা করেছেন এমন ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা উচিত। শুধু নাম নয়; তাঁদের পেশা, বয়স, সামাজিক অবস্থান—এসবও থাকতে হবে। তাহলে বোঝা যাবে, কাদের হাতে কালোটাকা বেশি আছে।

একশ্রেণির বড় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, আমলার হাতেই বিপুল পরিমাণ কালোটাকা আছে। তাঁরা টাকা হাতে নিয়ে বসে আসেন, সুযোগ-সময়মতো সাদা করবেন। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এ বছরও বড়রা খুব একটা টাকা সাদা করেননি। অবশ্য সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় (২০০৭ ও ২০০৮ সাল) চাপে পড়ে কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, আমলা টাকা সাদা করেছিলেন।

আমি মনে করি, কালোটাকা সাদা করেছেন এমন ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা উচিত। শুধু নাম নয়; তাঁদের পেশা, বয়স, সামাজিক অবস্থান—এসবও থাকতে হবে। তাহলে বোঝা যাবে, কাদের হাতে কালোটাকা বেশি আছে। কোন খাতে ব্যবস্থা নিতে হবে, তা-ও জানা যাবে। এতে ভবিষ্যতে কালোটাকা বানানোর পথগুলো বন্ধ করা যাবে।