আগে থেকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পরিস্থিতি আমার জানা ছিল না। আমি আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সেই দায়িত্ব নিয়েছিলাম। ব্যাংকঋণে অব্যবস্থাপনা থাকে, সেটা আদায় করা যায়। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে দায়িত্ব নিয়ে দেখলাম, এখানে টাকা লুট করা হয়েছে। সম্ভবত দেশের বাইরে টাকা পাচারও হয়ে গেছে। সিঙ্গারের সাবেক এমডি মাহবুব জামিল যত দিন চেয়ারম্যান ছিলেন, তত দিন প্রতিষ্ঠানটি অনেক শক্তিশালী অবস্থায় ছিল। প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার তাঁকে বের করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দখল করেন। এরপর সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকাই তছরুপ করা হয়েছে। এটা ঋণ না, পুরো টাকাটাই লুট হয়ে গেছে। পি কে হালদার দেশ থেকে পালিয়েও গেছেন, মনে হচ্ছে টাকাটাও দেশে নেই। এসব টাকা উদ্ধারের আইনি দায়িত্ব দুদকের।
একজন প্রশাসক বসিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানটির যে টাকা লুট করা হয়েছে, তার প্রকৃত সুবিধাভোগীদের খুঁজে বের করত হবে। দুদকও এ বিষয়ে কাজ শুরু করবে, এ প্রত্যাশা করি। এখনো যাঁরা দেশে আছেন, তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এ ঘটনা কোনোভাবেই ধামাচাপা দেওয়া ঠিক হবে না।
আমার অনুরোধ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বাদ দিয়ে দ্রুত পেশাদারির সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। না হলে আর্থিক খাতে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান একই সমস্যায় পড়বে। এভাবে জনগণের টাকা লুট করার সুযোগ করে দেওয়ার অধিকার বাংলাদেশ ব্যাংককে কেউ দেয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংককেও জবাবদিহি করতে হবে, কেন মাহবুব জামিলকে সরিয়ে পি কে হালদারের হাতে প্রতিষ্ঠানটি গেল। চার বছরেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কেন কোনো ব্যবস্থা নিল না।
পি কে হালদার একজন মেধাবী ব্যক্তি। এসব মেধাবী যখন খারাপ হন, তখন ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। তাঁকে দেশের একটি বড় গ্রুপ পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে বলে আমার মনে হয়। যারা পুরো আর্থিক খাতকে বিপদে ফেলেছে।