চীনের আলিবাবা কোম্পানির মালিকানাধীন ই–কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। কর্মীদের কাছে পাঠানো একটি বার্তায় দারাজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেমস ডং জানিয়েছেন, একটি ‘সুবিন্যস্ত ও কর্মতৎপর কাঠামো’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গ্রুপের সব পর্যায়ে কর্মী ছাঁটাই করা হবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ঠিক কতজন কর্মী এর ফলে চাকরি হারাবেন, সেটি কোম্পানির ওই অভ্যন্তরীণ বার্তায় নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারে দারাজের কার্যক্রম আছে। এসব দেশে ঠিত কত শতাংশ কর্মী বা সব মিলিয়ে কতজন কর্মী চাকরি হারাতে পারেন, সে সম্পর্কে কিছু বলতে দারাজ অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
অভ্যন্তরীণ বার্তায় বলা হয়, ‘অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমরা আমাদের দারাজ পরিবারের অনেক সদস্যকে বিদায় জানাব।’
গত বছর দারাজ রয়টার্সকে জানিয়েছিল যে বিভিন্ন দেশে তাদের তিন হাজার কর্মী রয়েছে। তবে প্রতিকূল বাজার পরিস্থিতি, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে শুরু হওয়া সংকট, সরবরাহব্যবস্থায় সমস্যা, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহার এবং ভর্তুকি কমে যাওয়ার কারণে এরপর কোম্পানিটি তাদের কর্মীসংখ্যা ১১ শতাংশ কমিয়েছিল।
জেমস ডং বলেন, ‘আমরা ভিন্ন ভিন্ন সমাধান খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। তবে আমাদের ব্যয়ের কাঠামো আমাদের আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা থেকে পেছনে পড়ে রয়েছে। বাজারে নজীরবিহীন চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকা ও অব্যাহতভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
জেমস ডং আরও বলেন, দারাজ এখন তিনটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে সক্রিয়ভাবে দারাজের সেবায় বৈচিত্র্য এনে গ্রাহকদের অভিজ্ঞতার মান উন্নত করা, পণ্যের ক্যাটাগরির সংখ্যা বাড়ানো এবং তাদের প্ল্যাটফর্মে বিক্রেতাদের কার্যক্রমের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করা।
গত জানুয়ারি মাসে জেমস ডংকে দারাজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আগের প্রধান নির্বাহী বিয়ার্ক মিকেলসেন দায়িত্ব ছাড়ার পর পদটি খালি হয়েছিল।
বিয়ার্ক মিকেলসেন গত বছর জানিয়েছিলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ হলো তাদের সবচেয়ে বড় বাজার।
দারাজের প্রতিষ্ঠা পাকিস্তানে ২০১২ সালে। মূলত অনলাইনে ফ্যাশনপণ্য বিক্রি করত এই প্রতিষ্ঠান। এরপর চীনের বিশাল ইন্টারনেট–ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আলিবাবা এটি অধিগ্রহণ করে। ২০১৮ সালে একটি নতুন ট্যাব খোলা হয়।
দারাজ চারটি প্রধান ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনা করে—ই–কমার্স, লজিস্টিকস, লেনদেন অবকাঠামো ও আর্থিক সেবা। কোম্পানিটি রয়টার্সকে বলেছে, তাদের তিন কোটি গ্রাহক রয়েছে। দুই লাখ সক্রিয় বিক্রেতা এক লাখের বেশি ব্র্যান্ডের পণ্য দারাজের প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করে থাকে।