বাংলাদেশে যত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আছে, তার প্রায় ৬০ শতাংশের অবস্থান ঢাকা অঞ্চলে। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলাতে সব মিলিয়ে প্রায় তিন লাখ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসায় শনাক্তকরণ নম্বর (বিআইএন) নিয়েছে, তাদের বিবেচনায় নিয়ে এই হিসাব করা হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ভ্যাট বিভাগ থেকে আরও জানা গেছে, ৯ মে প্রথমবারের মতো বিআইএনধারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। ভ্যাট বিভাগের সর্বশেষ হিসাবমতে, এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫ লাখ ১ হাজার ৬২৮টি প্রতিষ্ঠান বিআইএন নিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার চারটি ভ্যাট কমিশনারেটের আওতায় রয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৬৬০টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ সারা দেশে যত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভ্যাটের আওতায় আছে, তাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থিত।
যেকোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা শুরুর আগে একটি ব্যবসায় শনাক্তকরণ নম্বর নিতে হয়। এই বিআইএনের বিপরীতে প্রতি মাসে ভ্যাট রিটার্ন দেয় প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ আছে।
এ বিষয়ে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের সদস্য (ভ্যাট বাস্তবায়ন ও আইটি) মইনুল খান প্রথম আলোকে বলেন, গত দুই বছর ধরে ব্যবসায় শনাক্তকরণ নম্বর দেওয়ায় নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে গত দুই বছরের প্রায় ২ লাখ নতুন বিআইএনধারী প্রতিষ্ঠান পাওয়া গেছে। এর ফলে ভ্যাট আদায় বেশ বাড়বে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ১১টি ভ্যাট কমিশনারেট কাজ করছে। এই ১১টি কমিশনারেটের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে সবচেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠানের বিআইএন আছে। সব মিলিয়ে এই সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ৮২৩। মোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫ শতাংশই ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারের আওতায়।
ঢাকা উত্তরে ভ্যাট কমিশনারেটে আছে ৮০ হাজার ৭৭৯টি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ঢাকা পূর্ব ও পশ্চিমে আছে যথাক্রমে ৩১ হাজার ১৫৪টি এবং ৫৮ হাজার ৯০৪টি প্রতিষ্ঠান।
ঢাকার পরে চট্টগ্রাম
রাজধানী ঢাকার পরে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠানের বিআইএন আছে। চট্টগ্রামে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫২ হাজার ২৭৮টি। রংপুর, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, যশোর ও কুমিল্লায় আছে বাকি ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫৮০টি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া বৃহৎ করদাতা ইউনিটে সব মিলিয়ে ১১০টি প্রতিষ্ঠানের বিআইএন আছে। এলটিইউতে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের বড় বড় কোম্পানি। এখান থেকে ভ্যাট বাবদ আদায় করা অর্থের এক-তৃতীয়াংশ আসে।
বিআইএনধারী প্রতিষ্ঠানকে প্রতি মাসে বেচাকেনার সব তথ্য দিয়ে ভ্যাট রিটার্ন দিতে হয়। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বিআইএনধারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ৭৫-৮০ শতাংশ প্রতি মাসে ভ্যাট রিটার্ন দেয়।