বিভিন্ন কাঁচামাল পণ্য উৎপাদনস্থল থেকে খুচরা বিক্রি পর্যন্ত পাঁচ-ছয় হাত বদল হয়। সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিটি পর্যায়ে এভাবে হাতবদলের ফলে পণ্যের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
গতকাল রোববার রাতে কারওয়ান বাজারের কাঁচামালের আড়তে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় ট্রাক থেকে কাঁচামাল আনলোডিং, আড়তদার ও পাইকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ ও বিক্রয় কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে সংস্থাটি। এ সময় আট ধরনের অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে অধিদপ্তর।
ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, কারওয়ান বাজারে রাতের কার্যক্রম তদারকির সময় যেসব অনিয়ম দেখা গেছে তার মধ্যে রয়েছে উৎপাদক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ের কোনো স্তরেই পণ্য ক্রয়-বিক্রয় রসিদের প্রচলন নেই। কারওয়ান বাজারে কাঁচামাল সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছু সংখ্যক ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীর উপস্থিত রয়েছে। এসব লোকের কোনো দোকান বা ব্যবসায়িক পরিচয়ও পাওয়া যায়নি।
তদারকির সময় আরও দেখা গেছে, কারওয়ান বাজারে রাতে বেগুন, শসা ও লেবুর মতো পচনশীল সবজি পণ্য খোলা রাস্তায় ও আড়তের আংশিক জায়গায় আড়তদারেরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। তবে তাঁদের কারোরই ব্যবসার নিবন্ধন বা ট্রেড লাইসেন্স নেই।
ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, সবজির আড়তদার ও পাইকারি বিক্রেতারা পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদ গ্রহণ করেন না কিংবা প্রদানও করেন না। আড়তদার পাইকারি বিক্রেতারা পণ্যের কোনো মূল্যতালিকাও প্রদর্শন করেন না; অর্থাৎ সবজির আড়তগুলোতে পণ্য সরবরাহ ও বিক্রয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনকানুন মানা হয় না। এ ছাড়া অভিযানের সময় আড়তের মালিক ও প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন না।
করওয়ান বাজারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ভোক্তা অধিদপ্তর জানিয়েছে, কাঁচামাল পণ্যের অবাধ সরবরাহ ও যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করার বিষয়ে আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির সদিচ্ছা ও আগ্রহ দেখা যায়নি। এ কারণে আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে হাজির হয়ে উল্লিখিত অনিয়মের উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে কারওয়ান বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ভোক্তা অধিদপ্তর।