ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, আর সোনালি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাজারে তিন দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩০–৪০ টাকা। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব এবং গতকাল শনিবার রাজধানীর একাধিক বাজারে ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
টিসিবির হিসাবে দেখা গেছে, রাজধানীতে ১৮ ডিসেম্বর ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজিতে। আর সোনালি মুরগি মানভেদে প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিরপুর–১২ নম্বর বাজার ঘুরে দেখা যায়, সেখানে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে।
বিয়ে, বনভোজনের মতো সামাজিক অনুষ্ঠান বেড়ে গেছে। এসব অনুষ্ঠানে প্রচুর মুরগির ব্যবহার হয়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে।রেয়াজুল হক, মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর
ক্রেতা ও বিক্রেতারা বলছেন, তিন দিন আগেও ব্রয়লার ১৭০–১৮০ টাকা দরে এবং সোনালি মুরগি ২৮০–৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
কারওয়ান বাজারের একটি দোকান থেকে ২০০ টাকা দরে দেড় কেজির কিছু বেশি ওজনের একটি ব্রয়লার মুরগি কেনেন এ এস এম সায়েম। রাজধানীর নাখালপাড়ার এই ব্যবসায়ী বলেন, তিন দিন আগেও তিনি কারওয়ান বাজার থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার কিনেছেন। আজকে এসে দেখছেন ২০০–২১০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার বিক্রি করা হচ্ছে।
অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের হঠাৎ করে মুরগির দাম বাড়িয়ে দেওয়া অযৌক্তিক উল্লেখ করে এ এস এম সায়েম বলেন, দাম বাড়লেও কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়তে পারে, হঠাৎ করে ৩০–৪০ টাকা বাড়া অযৌক্তিক। সরকারের উচিত যারা অজুহাত পেলেই দাম বাড়িয়ে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে মুরগির দাম বেশি। তাই কিছু মুরগি অবৈধভাবে ভারতে যাচ্ছে। তা ছাড়া শীতে পানি কমে আসায় নদী–নালা, খাল–বিলে মাছ কমছে। এখন পর্যটনেরও সময়। বিয়ের মতো সামাজিক–ধর্মীয় অনুষ্ঠানও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এসব কারণে মুরগির চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে।খোন্দকার মো. মহসিন, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব
এখন পরিস্থিতি অন্য রকম। ব্যয় বাড়লেও আয় সেভাবে বাড়ছে না। একটি নির্দিষ্ট বাজেট নিয়ে মানুষ বাজারে আসে, হঠাৎ করে এত দাম বেড়ে গেলে সমস্যায় পড়তে হয় বলেও মন্তব্য করেন এ এস এম সায়েম। বেশি দামে কেনায় বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান কারওয়ান বাজারে মুরগি বিক্রেতা মো. জহিরুল স্বপন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এবার প্রথম যখন মুরগির দাম বাড়ে, তখন টঙ্গীর ইজতেমাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় সরবরাহে সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন সরবরাহকারীরা।
বাজারে মুরগির সরবরাহের ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব খোন্দকার মো. মহসিন। তিনি মনে করেন, যখন দাম কম ছিল, তখন খামারিদের লোকসান দিতে হচ্ছিল। দাম বাড়ার পরে এখন যে দাম তা বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে খোন্দকার মো. মহসিন বলছেন, বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে মুরগির দাম বেশি। তাই কিছু মুরগি অবৈধভাবে ভারতে যাচ্ছে। তা ছাড়া শীতে পানি কমে আসায় নদী–নালা, খাল–বিলে মাছ কমছে। এখন পর্যটনেরও সময়। বিয়ের মতো সামাজিক–ধর্মীয় অনুষ্ঠানও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এসব কারণে মুরগির চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেয়াজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ে, বনভোজনের মতো সামাজিক অনুষ্ঠান বেড়ে গেছে। এসব অনুষ্ঠানে প্রচুর মুরগির ব্যবহার হয়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়ে গেছে।