অপরিশোধিত তেল রপ্তানির ওপর দেওয়া মূল্যছাড় ২৫ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ২০ ডলার করার পরিকল্পনা করেছে রাশিয়া। গত মঙ্গলবার দেশটির অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানভ এ কথা জানিয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পরে রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সহ পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি রাশিয়া থেকে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে বেঁধে দেয় তারা। অর্থাৎ অন্য কোনো দেশ রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল নিতে চাইলে প্রতি ব্যারেল সর্বোচ্চ ৬০ ডলার বা এর চেয়ে কম দামে কিনতে হবে।
এসব কারণে তেল বিক্রি করে রাশিয়ার রাজস্ব কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রির ক্ষেত্রে বিদ্যমান রাজস্ব পদ্ধতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় রাশিয়া। গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার উরাল অপরিশোধিত তেলের ওপর ছাড় নির্ধারণ করে একটি আইনে স্বাক্ষর করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
নতুন আইনে রাশিয়া থেকে উরাল প্রতি ব্যারেল তেল কেনার ক্ষেত্রে ২৫ ডলার ছাড়ের বিধান রাখা হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতসহ কিছু দেশ রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে থাকে। তবে এবার সেই মূল্যছাড় কিছুটা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ার অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানভ বলেন, ‘বর্তমানে ব্রেন্ট ক্রুডের দামের তুলনায় উরাল তেলে প্রতি ব্যারেলে ২৫ ডলার ছাড় দেওয়া হয়। আমরা এটিকে ব্যারেলপ্রতি ২০ ডলারে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছি। এ ছাড়া তেল রপ্তানিতে আয় বাড়াতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা বিবেচনা করছি।’
আন্তন সিলুয়ানভ আরও জানান, প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বর্তমানে ৮০ ডলার করে নেওয়া হচ্ছে। এই হিসাবে চলতি বছর তেল ও গ্যাসের আয় থেকে ৮ লাখ কোটি রুবল (রাশিয়ার মুদ্রা) বা ৮ হাজার ৮৫০ কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতে পারবে রাশিয়া। আর মূল্যছাড় কমালে আয় আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের আয় ৪৭ শতাংশ কমেছে। আর চলতি বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়ার বাজেটঘাটতি হবে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ২ থেকে আড়াই শতাংশ। এ বিষয়ে আন্তন সিলুয়ানভ বলেন, ‘আমাদের কাছে পরিকল্পিত ও উদ্ভূত পরিস্থিতির খরচ মেটাতে যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে।’