কোভিডে মৃত্যুকে গড় আয়ু কমার কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এই প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন দেশে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর। এর আগের বছরের প্রতিবেদনের অনুযায়ী, তখন মানুষের গড় আয়ু ছিল ৭২ দশমিক ৮ বছর। দেশের মানুষের গড় আয়ু আগের চেয়ে কমে গেছে।
আজ সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ুর এই হিসাব দিয়েছে বিবিএস। তাদের করা বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস–২০২১ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে আসে। প্রতিবেদন অনুষ্ঠানে বিবিএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গড় আয়ু কমার ব্যাখ্যা দেন।
গড় আয়ু কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস–২০২১ প্রকল্পের পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, কোভিড ও কোভিড–পরবর্তী নানা জটিলতায় মানুষের মৃত্যু বেড়েছে। মৃত্যুজনিত কারণেই গড় আয়ু কমেছে।
এ বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, পরিসংখানের ভ্রান্তিমান (এরর) বিবেচনায় নিলে এবার প্রকাশিত গড় আয়ু এবং আগের প্রকাশিত গড় আয়ুর সংখ্যাটি পরিসংখ্যানগতভাবে একই। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই।
প্রত্যাশিত গড় আয়ু বলতে দেশের সব মানুষের সাধারণ গড় আয়ু বোঝায় না। সোজাভাবে বলা যায়, আজকে যে শিশুটি জন্মগ্রহণ করবে, ওই শিশুর প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর।
অনুষ্ঠানে কোভিডে কত মানুষ মারা গেছেন, তার হিসাবও দেওয়া হয়েছে। ওই হিসাবে দেখা গেছে, ২০২০ ও ২০২১ সালে সব মিলিয়ে ২৮ হাজার ৭২ জন মানুষ কোভিডে মারা গেছেন। বিবিএসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোভিড–পরবর্তী নানা জটিলতাও মানুষ মারা গেছেন।
বিবিএসের প্রতিবেদনে মানুষের মৃত্যুর হারের চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু হার বেড়েছে। যেমন স্থূল মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২০ সালে এই হার ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
আবার দেশে মাতৃমৃত্যুর হার আরও বেড়েছে। ২০২১ সালের হিসাবে, প্রতি এক লাখ জীবিত শিশু জন্ম দিতে গিয়ে ১৬৮ জন মা মারা যান। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৬৩ জন।
এক বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার কিছুটা বেড়েছে বলেও বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি এক হাজার এক বছর বয়সী শিশুর মধ্যে গড়ে ২২টি শিশুর মৃত্যু হয়। আগে এই সংখ্যা ছিল ২১।
নানা ধরনের রোগবালাইয়ে বেশি মৃত্যু হয়। জীবিত জন্ম হয়, কিন্তু এক মাস বয়স হওয়ার আগেই মারা যায়, এমন নবজাতকের সংখ্যা প্রতি হাজারে ১৬। এই হারও বেড়েছে বলে দেখা গেছে।