ডিম
ডিম

তেলের পর এবার ডিম আমদানিতে শুল্ক ছাড়

তেলের পর এবার ডিম আমদানিতে কর ছাড় দেওয়া হলো। ডিম আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই শুল্ক–সুবিধা থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত আদেশে জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর বলছে, আমদানি শুল্ক কমানোর ফলে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৩ দশমিক ৮০ টাকা কমবে। আমদানি শুল্ক কমানোর কারণে বাজারের ডিমের সরবরাহ বাড়বে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম কমবে। এ ছাড়া কনফেকশনারি, বেকারিসহ ডিমনির্ভর খাদ্য উৎপাদন শিল্পের খরচও কমবে।

এ দিকে ভোক্তা পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম কমাতে আবারও কর ছাড় দিয়েছে সরকার। স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানি—উভয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

আজ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (ইআরডি) থেকে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এই ছাড়ের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এর আগে চিনি আমদানিতেও শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার।

পরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পরিশোধিত পাম তেলের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল এবং পরিশোধিত ও অপরিশোধিত পাম তেলের আমদানি পর্যায়ের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ছাড় অব্যাহত থাকবে।

বর্তমানে বছরে ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়, বাকি ১৮ লাখ টন আমদানি করতে হয়।

নতুন সিদ্ধান্তের ফলে দেশে পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে আপাতত ভ্যাট দিতে হবে না এই শিল্প ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের। বিদেশ থেকে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল এবং পাম তেল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি পর্যায়ের ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ ভ্যাট দিলেই হবে।

আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েক মাস ধরে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সম্প্রতি এক চিঠিতে জানায় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সমিতি মন্ত্রণালয়কে জানায়, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ ও পাম তেলের দাম ১৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়েছে।

সচিবালয়ে গত মঙ্গলবার অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোজ্যতেল পরিশোধন শিল্পের সমিতি জানায়, স্থানীয় পর্যায়ে দাম তারা বাড়াবে না, যদি সরকার আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনে। পাশাপাশি স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারও চায় তারা। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এই কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেও দুই মাসের জন্য উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার হয়েছিল। আর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমানো হয়েছিল।

সম্প্রতি দেশের বাজারে বিভিন্ন ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার এসব পণ্য আমদানিতে কর ছাড় দেওয়া শুরু করেছে। এর আগে সরকার পরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ৯ অক্টোবর এনবিআর অপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করে।

এ ছাড়া ডিমের দাম মানুষের নাগালের মধ্যে আনতে সরকার ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে ডিমের আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।